শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫| রাত ১০:৫১

কাশ্মির ও পানি ইস্যুতে ভারতকে সংলাপের আহ্বান শেহবাজ শরিফের, যুদ্ধ নয় শান্তি চান পাকিস্তান

প্রতিবেদক
staffreporter
মে ১৭, ২০২৫ ৭:৪১ অপরাহ্ণ
কাশ্মির ও পানি ইস্যুতে ভারতকে সংলাপের আহ্বান শেহবাজ শরিফের, যুদ্ধ নয় শান্তি চান পাকিস্তান

কাশ্মির ও পানি ইস্যুতে ভারতকে সংলাপের আহ্বান শেহবাজ শরিফের, যুদ্ধ নয় শান্তি চান পাকিস্তান

কাশ্মির এবং নদীর পানি বণ্টনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভারতকে সংলাপে বসার প্রস্তাব দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, রাজনীতি ও কূটনীতি বাদ দিয়ে যদি যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাওয়া হয়, তবে তা ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশের জন্য সীমাহীন দুর্ভোগ ডেকে আনবে।

শুক্রবার ইসলামাবাদে আয়োজিত ‘ইয়োম-ই-তাশাকুর’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেহবাজ বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে বিস্তৃত সংলাপে বসতে চাই, যেখানে কাশ্মির ও অভিন্ন নদীর পানি নিয়ে আলোচনা হবে। এসব ইস্যুর সমাধানের পর আমরা বাণিজ্য ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যৌথভাবে কাজ করতে পারব।” তিনি জানান, সন্ত্রাসবাদে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তান অন্যতম এবং এ কারণে বিগত কয়েক দশকে তারা হারিয়েছে ৯০ হাজার প্রাণ ও ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে ১৫ হাজার কোটি ডলার।

এই বক্তব্যের পটভূমি তৈরি হয়েছে সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের প্রেক্ষিতে। ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামে একদল সন্ত্রাসীর হামলায় ২৬ জন হিন্দু পুরুষ পর্যটক নিহত হন। হামলার দায় স্বীকার করে টিআরএফ নামক একটি গোষ্ঠী, যার সঙ্গে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার সংযোগ রয়েছে বলে দাবি ভারতের।

এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত শুরু করে ‘অপারেশন সিঁদুর’, যাতে পাকিস্তানের তথ্য মতে ১৩ জন সেনাসদস্যসহ ৫১ জন নিহত হন। এর জবাবে পাকিস্তান চালায় ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’, যার অর্থ ‘সীসার প্রাচীর’। এতে ভারতীয় তথ্যমতে, ৫ জন সেনা ও ১৬ জন বেসামরিক নিহত হয়েছেন।

এই পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, যা ১০ মে থেকে কার্যকর হয়।

শেহবাজ শরিফ তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা যুদ্ধে জয়ী হয়েছি, কিন্তু তারপরও শান্তি চাই। কারণ যদি সত্যিই দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধে, তবে উপমহাদেশের ১৬০ কোটির বেশি মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়বে। পরিস্থিতি এমন হবে যে, কেউ বেঁচে থাকবে না— যুদ্ধ কীভাবে শুরু হয়েছিল, তা বলার মতোও।”

ইয়োম-ই-তাশাকুর উপলক্ষে ইসলামাবাদসহ পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে সামরিক কুচকাওয়াজ, পতাকা উত্তোলন, গান স্যালুট এবং শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন শেহবাজ শরিফ ছাড়াও পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির, বিমানবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, মন্ত্রিসভার সদস্য, কূটনীতিক, শহীদদের পরিবার এবং বিভিন্ন সেলিব্রেটি।

বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। হামলার ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ কয়েকটি কূটনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়, যার পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ আহ্বান, এই উত্তেজনা নিরসন করে সংলাপ ও শান্তির পথে হাঁটার।

সূত্র: ডন

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি