‘পদত্যাগ আত্মঘাতী হবে’: ড. ইউনূসকে সতর্ক করলেন ফরহাদ মজহার
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে চলমান গুঞ্জনের প্রেক্ষাপটে মন্তব্য করেছেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেছেন, ড. ইউনূস পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে ভুল করেছেন, এবং যদি সত্যি পদত্যাগ করেন, তবে তা হবে তাঁর ব্যর্থতা ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
শুক্রবার (২৩ মে) সকাল ৮টা ৩৯ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘‘ড. ইউনূস কোনো ব্যক্তি বা দলের প্রতিনিধি নন, বরং তাঁর উচিত জনগণের ঐতিহাসিক অভিপ্রায়কে সম্মান জানানো। কোনো দল বা গোষ্ঠীর চাপে বিভ্রান্ত না হয়ে জনগণের ওপর আস্থা রাখা প্রয়োজন।’’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘‘বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, বরং রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ড. ইউনূসকে নির্বাচিত করেছে। তাই খুনিদের বিচার ও নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়া তাঁকেই শুরু করতে হবে।’’
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘‘কাছা খোলা বাজার ব্যবস্থার চাপিয়ে দেওয়া করপোরেট দখলদারিত্বের বিপরীতে গণবান্ধব ও বিনিয়োগবান্ধব নীতি গ্রহণ এবং তা কার্যকর করতে হবে। একইসঙ্গে দিল্লি ও মিয়ানমারসহ শত্রুদেশের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠনের ওপর জোর দেন তিনি। কারণ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব এখন বাংলাদেশের কাঁধেই বর্তেছে।’’
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের সৈনিকরা এই দেশের সন্তান এবং তারা জনগণের সামষ্টিক ইচ্ছার অংশ। তারা জনগণের স্বার্থেই কাজ করবেন—আমরা কেউই মঙ্গলগ্রহ থেকে আসিনি।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে ফরহাদ মজহার বলেন, “নির্বাচন অবশ্যই দ্রুত হওয়া উচিত। জনগণ চায় সেনাবাহিনী ও প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক। তবে সেনাপ্রধান যেভাবে তাঁর এখতিয়ারের বাইরে নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করেছেন, তা লুটেরা ও মাফিয়া চক্রকে আবার ক্ষমতায় আনার চেষ্টা বলে মনে হয়। যদি তা সত্যি হয়, এবং এর ফলে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে যায়, তবে তার দায় সেনাপ্রধানের ওপর বর্তাবে।”
সবশেষে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সবাই যেন দায়িত্বশীল আচরণ করে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করেন—এমনটিই জনগণ প্রত্যাশা করে।