যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক না উঠলে মাসে ২৫০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির আশঙ্কা, হুমকিতে পোশাক খাতের এক হাজার কারখানা
যুক্তরাষ্ট্র ৩৭ শতাংশ শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার না করলে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলারের শুল্ক পরিশোধ করতে হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শিল্প সংশ্লিষ্ট নেতারা। তাদের মতে, এই শুল্ক অব্যাহত থাকলে দেশের প্রায় এক হাজার পোশাক কারখানা অস্তিত্ব সংকটে পড়তে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যেতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পোশাক খাতের নেতারা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর উত্তরার জায়ান্ট বিজনেস টাওয়ারে বিজিএমইএ নির্বাচন ২০২৫–২০২৭ উপলক্ষে সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনি কার্যালয় উদ্বোধন ও দোয়া মাহফিলে তারা এসব কথা বলেন।
সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল নেতা মো. আবুল কালাম বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত হওয়া নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানাই, যিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়ে এই উদ্যোগের অনুরোধ জানান।”
উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক ঘোষণায় বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেন। এর আওতায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক নির্ধারিত হয়। এরপর ৭ এপ্রিল ড. ইউনূস এই শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিতের অনুরোধ জানান এবং ৯ এপ্রিল ট্রাম্প চীন ছাড়া অন্যান্য দেশের জন্য শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন। এতে বাংলাদেশও অন্তর্ভুক্ত হয়।
তবে এই স্থগিতাদেশ স্থায়ী না হলে আবারও বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পোশাক শিল্পের নেতারা। আবুল কালাম বলেন, “শুল্ক না উঠলে উদ্যোক্তাদের উপর বিশাল অর্থনৈতিক চাপ পড়বে। প্রতি মাসে গড়ে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের শুল্ক দিতে হবে, অথচ লাভ থাকে ৩-৪ শতাংশ। এতে টিকতে পারবে না অনেক কারখানা।”
তিনি আরও বলেন, ক্রেতাদের উপর শুল্কভার চাপানোর নিয়ম থাকলেও, বাস্তবতা হলো সরবরাহকারীদেরই এর বেশিরভাগ বোঝা বহন করতে হচ্ছে। তাই শুল্ক স্থায়ীভাবে প্রত্যাহারের জন্য মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় অংশ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও সম্মিলিত পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী ফারুক হাসান, বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন ফারুক, বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন পাভেল, বিজিএমইএর সহায়ক কমিটির সদস্য আসিফ আশরাফ এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইয়ুথ লিডারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবরার হোসেন সায়েম।