এবার মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করল চীন
চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীন মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা সিনহুয়াকে দেওয়া বক্তব্যে মুখপাত্র বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যের ওপর যে অত্যধিক শুল্ক আরোপ করছে, তা একটি সংখ্যার খেলা ছাড়া আর কিছুই নয়। এর কোনো বাস্তব অর্থনৈতিক তাৎপর্য নেই।” তিনি অভিযোগ করেন, “যুক্তরাষ্ট্র শুল্ককে হুমকি ও বলপ্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে, যা শেষ পর্যন্ত বিশ্বের কাছে তাদের হাস্যকর করে তুলবে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র যদি এই শুল্ক খেলায় মেতে থাকে, তাহলে চীন তাতে যোগ দেবে না। তবে আমাদের জাতীয় স্বার্থে কোনো আঘাত এলে আমরা দৃঢ়ভাবে পাল্টা জবাব দেব এবং শেষ পর্যন্ত লড়াই করব।”
এই বাণিজ্য উত্তেজনার শুরুটা হয়েছে এ বছরের মার্চে। তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। এরপর গত ২ এপ্রিল তিনি শুল্ক বাড়িয়ে ৩৪ শতাংশ করার ঘোষণা দেন। জবাবে চীন পরের দিনই মার্কিন পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক ধার্য করে। এতে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প গত ৭ এপ্রিল তাঁর সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ বলেন, “বেইজিং যদি ৮ এপ্রিলের মধ্যে তাদের শুল্ক তুলে না নেয়, তাহলে চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ৫০ শতাংশ বাড়ানো হবে।” চীন এই হুমকিতে সাড়া না দেওয়ায় গত ৯ এপ্রিল থেকে শুল্ক বাড়িয়ে ১০৪ শতাংশ করা হয়।
এরপর গত ৮ এপ্রিল চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ট্রাম্পের ‘অপমানজনক’ শুল্ক নীতি অব্যাহত থাকলে তারা শেষ পর্যন্ত লড়বে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, ৯ এপ্রিল তারা মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশ করে। কিন্তু ট্রাম্প থেমে থাকেননি। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দুই দফায় তিনি চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ান। সর্বশেষ গতকাল, বৃহস্পতিবার রাতে তিনি শুল্ক ১৪৫ শতাংশে উন্নীত করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চীন মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দেয়।
এই পাল্টাপাল্টি শুল্ক বৃদ্ধি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও তীব্র করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উত্তেজনা শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি বিশ্ব বাণিজ্য, সরবরাহ শৃঙ্খল এবং পণ্যের দামের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশের মতো দেশ, যারা উভয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল, তাদের জন্যও এটি নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।