শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| ভোর ৫:১৩

গাজায় হত্যাযজ্ঞের মধ্যেই ইসরাইলি মন্ত্রীকে আতিথ্য দিলো আরব আমিরাত!

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ৮, ২০২৫ ৬:০৫ অপরাহ্ণ
গাজায় হত্যাযজ্ঞের মধ্যেই ইসরাইলি মন্ত্রীকে আতিথ্য দিলো আরব আমিরাত!

গাজায় হত্যাযজ্ঞের মধ্যেই ইসরাইলি মন্ত্রীকে আতিথ্য দিলো আরব আমিরাত!

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক হামলা আর পশ্চিম তীরের ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেই সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সা’আরকে উষ্ণ আতিথ্য দিয়েছে। এই ঘটনা অনেকের কাছে অবাক করা এবং বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আমিরাতের সরকারি সংবাদ সংস্থা আমিরাতি নিউজ এজেন্সি (ডব্লিউএএম) জানিয়েছে, রোববার (৬ এপ্রিল) আবুধাবিতে গিদিওনকে স্বাগত জানান আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।

ডব্লিউএএম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই মন্ত্রী ইসরায়েল ও আমিরাতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছেন। তারা আঞ্চলিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে গাজার মানবিক সংকটের প্রভাব নিয়েও আলোচনা করেন। শেখ আবদুল্লাহ গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির জন্য কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এই অঞ্চলে সংঘাত এড়ানো জরুরি। আমাদের শান্তির পথ খুঁজতে হবে।”

বৈঠকে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা আর মানবিক সহায়তা বাড়ানোর বিষয়টিও উঠে আসে। শেখ আবদুল্লাহ বলেন, “গাজার মানুষ ভয়াবহ সংকটে আছে। তাদের জন্য খাবার, ওষুধ নিশ্চিত করতে জরুরি সাহায্যের নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহ দরকার।” তিনি ফিলিস্তিনিদের প্রতি আমিরাতের দীর্ঘদিনের সমর্থনের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “আমরা ফিলিস্তিনি ভাইদের পাশে আছি। এটা আমাদের ঐতিহাসিক অঙ্গীকার।”

এই বৈঠকের পর গিদিওন সামাজিক মাধ্যম এক্সে লেখেন, “দ্বিতীয়বারের মতো শেখ আবদুল্লাহর সঙ্গে আবুধাবিতে দেখা হয়েছে। এটা আমার জন্য সম্মানের। মধ্যপ্রাচ্যে চ্যালেঞ্জ আছে, কিন্তু সহযোগিতার অংশীদারও আছে। আয়োজকদের ধন্যবাদ!” তার এই পোস্টে ইসরায়েল-আমিরাত সম্পর্কের উষ্ণতা ফুটে ওঠে।

কিন্তু এই আতিথ্য অনেকের কাছে প্রশ্ন তুলেছে। গাজায় ১৮ মাস ধরে ইসরায়েলি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পশ্চিম তীরেও ধ্বংস চলছে। এমন সময়ে আমিরাতের এই পদক্ষেপকে অনেকে ‘আশ্চর্যজনক’ বলছেন।

২০২০ সালে আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে ইসরায়েল ও আমিরাতের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, কূটনীতি বেড়েছে। কিন্তু গাজার সংকটে আমিরাতের এই অবস্থান বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। একজন বিশ্লেষক বলেন, “আমিরাত শান্তির কথা বলছে, কিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গে এই সম্পর্ক অনেকের কাছে দ্বিচারিতা মনে হচ্ছে।”

শেখ আবদুল্লাহ গাজার জন্য সাহায্যের কথা বললেও, ইসরায়েলি মন্ত্রীকে আতিথ্য দেওয়া সেই বার্তাকে ম্লান করে দিয়েছে। আমিরাত বলছে, তারা কূটনীতির মাধ্যমে শান্তি চায়। কিন্তু এই পদক্ষেপ তাদের অবস্থানকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

ইসরায়েলি হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জিম্মি সংকট এখনো অমীমাংসিত। এমন পরিস্থিতিতে আমিরাতের এই আতিথ্য ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ক্ষোভ জাগিয়েছে।

আমিরাতের দাবি, তারা গাজার জন্য কাজ করছে। শেখ আবদুল্লাহ বলেন, “আমরা সংঘাত চাই না। আমরা সাহায্য পৌঁছাতে চাই।” কিন্তু এই বৈঠকের ছবি আর গিদিওনের পোস্ট সেই দাবিকে অনেকের কাছে ফাঁপা মনে করাচ্ছে।

(সূত্র: ডব্লিউএএম)

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি