আ.লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়ে গেছে, এটার আর পুনর্জাগরণ হবে না – নুর
গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক নুরুল হক নুর বলেছেন, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অস্তিত্ব এখন শেষ হয়ে গেছে। বুধবার, ২ এপ্রিল, বিকেলে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মুজিব নগর ইউনিয়নে গণঅধিকার পরিষদের এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এ কথা বলেন। তার মতে, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অত্যাচারে মানুষ যেমন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল, তেমনি এখন তাদের পলায়নের মধ্য দিয়ে দলটির রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এটার আর পুনর্জাগরণ হবে না।”
নুরুল হক নুর বলেন, “আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা আর তাদের কর্মীরা এলাকায় এমন উৎপাত চালিয়েছে যে, সাধারণ মানুষ টিকতে পারেনি। এখন শেখ হাসিনা নেই, আওয়ামী লীগের সেই উৎপাতকারীরাও নেই। সবাই পোটলা-পাটলা গুটিয়ে পালিয়ে গেছে। বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে কখনো দেখা যায়নি। সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে একটি দলের নেতাকর্মীরা এভাবে পালিয়ে যায়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগের এই দশা হয়েছে। এই পলায়নই তাদের রাজনৈতিক শেষের সাক্ষী।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “যে কারণে মানুষ আওয়ামী লীগকে ঘৃণা করে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে, অন্য কোনো দল যদি সেই পথে হাঁটে, তাদেরও একই পরিণতি হবে।”
তিনি গত ১৬ বছরের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, “বিএনপি, জামায়াতসহ ১৮ দল, ২০ দল মিলে বহু আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু কোনো আন্দোলনই সরকারকে হটাতে পারেনি। আওয়ামী লীগ প্রশাসন আর ভারতের সমর্থন নিয়ে এমন একটি ব্যবস্থা গড়েছিল, যেখানে আন্দোলন বারবার ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা, বিশেষ করে তরুণ-যুবকদের আপসহীন লড়াই এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। এই আন্দোলনে রাজনৈতিক নেতাদের চেয়ে সাধারণ মানুষ বেশি প্রাণ দিয়েছে। তারা ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগের অত্যাচার, চাঁদাবাজি, দখলবাজি দেখেছে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, উন্নয়নের নামে লুটপাট—এসবই মানুষকে রাস্তায় নামিয়েছে।”
নিজের রাজনৈতিক যাত্রা নিয়ে নুর বলেন, “২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা মানুষের মধ্যে জাগরণ এনেছিলাম। পরে গণঅধিকার পরিষদ গড়ে তুলি। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি চাই না। সংঘাত বা সহিংসতা নয়, আমরা সম্প্রীতি আর ভালোবাসার রাজনীতি চাই। যারা রাজনীতি করবে, তারা জনগণের সেবা করবে, লুটপাট নয়। যারা ভুল বুঝে স্বীকার করবে, তাদের ক্ষমা করে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।”
সাধারণ মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, “কিছু টাকার লোভে দুর্বৃত্তদের ভোট দিলে পাঁচ বছর কষ্ট পাবেন। এই আন্দোলন আমরা সবাই মিলে করেছি। আগামীর বাংলাদেশও সবাই মিলে গড়ব। কেমন দেশ চান, কাকে সমর্থন করবেন—সিদ্ধান্ত আপনাদের।”
সভায় দুলারহাট থানা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব মাহিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আতিক রহমান, ফখরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ অনেকে।