থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ সফরে ঢাকা ছেড়েছেন। তিনি থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে রওনা হয়েছেন। এই সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ নেতারা অংশ নেবেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ব্যাংককের উদ্দেশে রওনা দেন। এই সফর বাংলাদেশের আঞ্চলিক কূটনীতির জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।
গতকাল প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান এক ব্রিফিংয়ে জানান, ড. ইউনূস ৩ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত থাইল্যান্ডে থাকবেন। এই সফরে তার সঙ্গে রয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন। এই দলটি সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে এবং গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নেবে।
এই সফরে প্রধান উপদেষ্টা বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। বিশেষ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠকটি অনেকের নজরে রয়েছে। ব্যাংকক সময় শুক্রবার বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে এই বৈঠক হওয়ার কথা। এই আলোচনায় দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে কথা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া সম্মেলনের সময় দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানেও উপস্থিত থাকবেন ড. ইউনূস। এই চুক্তিগুলো আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলবে।
সম্মেলনের তৃতীয় দিনে একটি বিশেষ মুহূর্ত আসছে। বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে পরবর্তী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গর্বের বিষয়। বিমসটেকের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য, যোগাযোগ, এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এই দায়িত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই সফর নিয়ে দেশে আগ্রহের কমতি নেই। তিনি বিশ্বব্যাপী শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে পরিচিত। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের অবস্থান আরও শক্ত করতে চায়। প্রেস উইং জানিয়েছে, “প্রধান উপদেষ্টা এই সম্মেলনে বাংলাদেশের স্বার্থের কথা তুলে ধরবেন। তিনি আঞ্চলিক ঐক্য ও অর্থনৈতিক উন্নতির ওপর জোর দেবেন।”
বিমসটেক সম্মেলন বাংলাদেশের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ? এই প্ল্যাটফর্মে ভারত, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটানের মতো দেশগুলো রয়েছে। এই দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ও সহযোগিতা বাড়লে বাংলাদেশের অর্থনীতি নতুন গতি পাবে। ড. ইউনূসের সঙ্গে মোদির বৈঠকটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, সীমান্ত, এবং পানি বণ্টনের মতো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
এই সফরে ড. ইউনূসের সঙ্গে থাকা দলটিও শক্তিশালী। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের উপস্থিতি বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়। সব মিলিয়ে, এই সফর বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে।