দোহায় শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী ও বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই লক্ষ্যেই কাতারের দোহায় এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
কারা ছিলেন এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে?
এই বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের তালিকাটি বেশ গুরুত্ববহ। ছমালদ্বীপের প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী, মালয়েশিয়ার রাজপরিবারের সদস্য, একজন প্রাক্তন মন্ত্রী, কাতার রাজপরিবারের প্রভাবশালী সদস্য, শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক ব্যাংকার, এবং কয়েকজনধনী অনাবাসী বাংলাদেশি। এত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের প্রতি তাদের আগ্রহের ইঙ্গিত দেয়।
বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনার কথা তুলে ধরলেন ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা বিনিয়োগকারীদের সামনে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন“অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশকে একটি উৎপাদন ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে। আমরা এমন এক পরিবেশ তৈরি করছি, যেখানে বিদেশি বিনিয়ো স্বাগত জানানো হবে সর্বোচ্চ সুবিধা ও স্বচ্ছতায়।”তিনি আরও জানান, সরকার চায় বাংলাদেশকে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ উৎপাদনশীল দেশ রূপান্তর করতে। এজন্য পর্যটন, জ্বালানি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ব্যাংকিং, উৎপাদন খাতে অভাবনীয় সুযোগ রয়েছে— বিশেষকক্সবাজারের রিসোর্ট জোন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশাল সম্ভাবনার ক্ষেত্র।
বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ
বৈঠকে উপস্থিত বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশের সম্ভাবনা দেখে মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। তারা বিভিন্ন খাতে— বিশেষ করপর্যটন, বিদ্যুৎ, শিল্প উৎপাদন ও ব্যাংকিং সেক্টরে সম্ভাব্য বিনিয়োগ নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন। কক্সবাজারের সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলকে আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্ট হিসেবে গড়ে তোলার ধারণা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ
বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বল“আপনারা সরাসরি বাংলাদেশে এসে ব্যবসায়িক পরিবে পরিদর্শন করুন এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠকে অংশগ্রহণ করুন। তবেই বুঝতে পারবেন, বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের জন্য কতটা প্রস্তুত।”বৈঠকে আরও যারা ছিলেন
বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন। পুরো আলোচনা ছিল আন্তরিক ও ফলপ্রসূ, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক বিনিয়োগের দুয়ার খুলে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সরকারের এমন পদক্ষেপ দেশবাসীর জন্য যেমন আশাব্যঞ্জক, তেমনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের অবস্থানকেও আরও দৃঢ় করবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।