ডিসি বাংলোর গর্তে মিললো ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসসহ ৭৯ বস্তা ব্যালট
নাটোরের পরিত্যক্ত ডিসি বাংলোর মাঠ থেকে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসসহ মোট ৭৯ বস্তা ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনা ঘটেছে শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত। যৌথ বাহিনীর অভিযানে এই বিপুল পরিমাণ ব্যালট উদ্ধারের কথা রোববার সকালে নিশ্চিত করেছেন নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাবুর রহমান। এই ঘটনা দেশের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
ঘটনার বিবরণে যাওয়ার আগে বলে নিই, এই উদ্ধার অভিযান শুরু হয় শনিবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে। টানা চার ঘণ্টা ধরে মাটি খুঁড়ে ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটে এই কাজ শেষ হয়। নাটোর সদর থানার ওসি মাহাবুর রহমান আমাদের জানান, “শনিবার দুপুরে আমরা খবর পাই যে পরিত্যক্ত ডিসি বাংলোর মাঠে ব্যালট পেপার পুঁতে রাখা হয়েছে। এরপর ঊর্ধ্বতন পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বিকেল পর্যন্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।” তিনি বলেন, “সবার সম্মতিতে রাতে অভিযান শ personally, I saw the operation unfold—যৌথ বাহিনী কঠোর পরিশ্রম করে মাটির নিচ থেকে ৭৯ বস্তা ব্যালট বের করে।”
এই ব্যালটগুলোর মধ্যে ছিল ৪০টি আড়াই মণের বস্তা আর ৩৯টি ৬০ কেজির বস্তা। অবাক করা বিষয় হলো, এর সঙ্গে একটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসও পাওয়া গেছে। ওসি মাহাবুর রহমান জানান, “এগুলো ব্যবহৃত ও অব্যবহৃত ব্যালট পেপার। আমরা এখন এগুলো থানা হেফাজতে রেখেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” এই ব্যালটগুলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বলে জানা গেছে, যা এই ঘটনাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
ঘটনার শুরু হয়েছিল শনিবার দুপুরে। নাটোর শহরের দক্ষিণ কান্দিভিটু এলাকায় জেলা প্রশাসকের এই পরিত্যক্ত বাংলোটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের বাইরে ছিল। জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) নাটোর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এখানে তল্লাশি চালান। তাদের সন্ধানে মিলে মাটির নিচে পুঁতে রাখা বিপুল পরিমাণ ব্যালট পেপার আর স্ক্রাব এক্সেসরিজ। এরপরই পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীকে নিয়ে রাতে উদ্ধার অভিযান শুরু হয়।
এই ঘটনা স্থানীয় মানুষের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমরা ভাবতেও পারিনি এমন কিছু এখানে লুকানো থাকতে পারে। এটা আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য বড় প্রশ্ন।” আরেকজন বলেন, “এত বড় পরিমাণ ব্যালট কীভাবে এখানে এলো, কে এটা করল, এসব জানতে চাই।” এই ঘটনা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমেও আলোচনার ঝড় উঠেছে।
ওসি মাহাবুর রহমান আরও জানান, “এই ব্যালটগুলোর মধ্যে কিছু ব্যবহৃত, কিছু অব্যবহৃত। আমরা এখনো তদন্ত করছি এগুলো কীভাবে এখানে এলো।” তিনি বলেন, “একটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস পাওয়া গেছে, যার বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।” এই ডিভাইসটি কী ধরনের, তা নিয়ে এখনো স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি। তবে এটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।