শুক্রবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৫| রাত ৩:৫০

বাইডেনসহ বেশ কয়েক জনের নিরাপত্তা প্রত্যাহারের ঘোষণা ট্রাম্পের

প্রতিবেদক
staffreporter
মার্চ ২৩, ২০২৫ ৪:৩৯ অপরাহ্ণ
বাইডেনসহ বেশ কয়েক জনের নিরাপত্তা প্রত্যাহারের ঘোষণা ট্রাম্পের

বাইডেনসহ বেশ কয়েক জনের নিরাপত্তা প্রত্যাহারের ঘোষণা ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে! প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরেই সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নিরাপত্তা ছাড়পত্র ও গোয়েন্দা তথ্যের অধিকার প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার (২২ মার্চ, ২০২৫) এই চাঞ্চল্যকর সিদ্ধান্ত প্রকাশের পর থেকে ওয়াশিংটনে ঝড় উঠেছে। এই তালিকায় রয়েছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, এবং বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে অনেকে “প্রতিশোধের রাজনীতি” হিসেবে দেখছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা।

ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ঘোষণা করেন, “জো বাইডেনের আর গোপন তথ্য পাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আমি তাৎক্ষণিকভাবে তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করছি।” তিনি এই সিদ্ধান্তের জন্য বাইডেনের ২০২১ সালের একটি পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন, যখন বাইডেন ট্রাম্পের নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করেছিলেন, তাকে “অস্থির আচরণের” জন্য দায়ী করে। ট্রাম্প লিখেছেন, “বাইডেনই এই নজির স্থাপন করেছিল। এখন আমি জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করছি। জো, তুমি বরখাস্ত!” এই পোস্টের পর তিনি তার স্বভাবসুলভ স্লোগান “মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন” যোগ করেন।

এই সিদ্ধান্তের আওতায় শুধু বাইডেন নন, কমলা হ্যারিস, হিলারি ক্লিনটন, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, এবং এমনকি রিপাবলিকান দলের ট্রাম্প-বিরোধী নেতা লিজ চেনি ও অ্যাডাম কিনজিঙ্গারের নামও রয়েছে। এছাড়া, বাইডেনের পুত্র হান্টার ও কন্যা অ্যাশলির সিক্রেট সার্ভিস সুরক্ষাও তিনি তুলে নিয়েছেন। এই তালিকায় আরও রয়েছেন ৫১ জন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, যারা ২০২০ সালে হান্টার বাইডেনের ল্যাপটপ নিয়ে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছিলেন। ট্রাম্পের দাবি, এই পদক্ষেপ “জাতীয় স্বার্থে” অপরিহার্য।

এই ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ডেমোক্র্যাটরা এটিকে “ক্ষমতার অপব্যবহার” বলে সমালোচনা করেছেন। একজন ডেমোক্র্যাটিক নেতা বলেন, “ট্রাম্প তার বিরোধীদের শায়েস্তা করতে জাতীয় নিরাপত্তাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন।” অন্যদিকে, ট্রাম্পের সমর্থকরা বলছেন, “বাইডেন প্রশাসনের সময় যারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।” সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “ট্রাম্প প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছেন। এটা শুধু শুরু।”

আন্তর্জাতিকভাবেও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের এক মুখপাত্র বলেছেন, “এটি যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের জন্য হুমকি।” তবে ট্রাম্পের প্রশাসন পিছু হটছে না। জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড ইতিমধ্যে এই নির্দেশ কার্যকর করতে শুরু করেছেন। এই পদক্ষেপের ফলে বাইডেন প্রশাসনের গোয়েন্দা তথ্যে প্রবেশাধিকার সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।

ট্রাম্পের এই “প্রতিশোধের তালিকা” যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠছে—এই প্রতিহিংসার শেষ কোথায়? বাইডেন এখনও এ বিষয়ে মুখ খোলেননি, তবে তার ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তিনি আইনি পথে লড়তে প্রস্তুত। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ কি যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বিভক্ত করবে, নাকি তার সমর্থকদের আরও উজ্জীবিত করবে—সেটাই এখন দেখার বিষয়।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি