রবিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৫| বিকাল ৫:৩৪

প্রোটিনের গুরুত্ব ও ঘাটতির ভয়াবহ প্রভাব: আপনি কি সচেতন?

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ২০, ২০২৫ ১২:০৩ অপরাহ্ণ
প্রোটিনের গুরুত্ব ও ঘাটতির ভয়াবহ প্রভাব: আপনি কি সচেতন?

প্রোটিনের গুরুত্ব ও ঘাটতির ভয়াবহ প্রভাব: আপনি কি সচেতন?

প্রোটিনকে অনেক সময় ‘জীবনের ভিত্তি’ বলা হয়ে থাকে, আর এর পেছনে যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষ, পেশী, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং এমনকি হরমোন তৈরি ও মেরামতে প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শুধু শরীর গঠনের জন্য নয়, বরং দেহের স্বাভাবিক কার্যক্রম সঠিকভাবে চালিয়ে নেওয়ার জন্য এক অপরিহার্য উপাদান। ত্বক, চুল, নখসহ দেহের বাহ্যিক সৌন্দর্য রক্ষায়ও প্রোটিন সরাসরি ভূমিকা রাখে।

আজকের ব্যস্ত জীবনে আমরা প্রায়ই তিনবেলার খাবারের অন্তত একটি বাদ দিয়ে থাকি। কখনো নাস্তা তাড়াহুড়ায় এড়িয়ে যাই, কখনো আবার রাতের খাবারে অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট খাই। এতে মনে হতে পারে যে শরীর ঠিকই চলছে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে ঘটে চলেছে নানা ক্ষতি। নিয়মিত প্রোটিন ঘাটতির ফলে শরীরে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে, যা প্রথমে চোখে না পড়লেও ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়।

প্রতিদিন একজন মানুষের কতটুকু প্রোটিন প্রয়োজন, তা নির্ভর করে বয়স, ওজন, দৈহিক পরিশ্রমের মাত্রা এবং স্বাস্থ্যের ওপর। পুষ্টিবিদদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির শরীরের প্রতি কেজি ওজনের জন্য দৈনিক ০.৮ থেকে ১ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। অর্থাৎ ৬৫ কেজি ওজনের একজন মানুষের প্রতিদিন গড়ে ৫২-৬৫ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া উচিত।

খাবার থেকে প্রোটিন কমে গেলে শরীর সেই ঘাটতি পূরণ করতে নিজের পেশী ও হাড় থেকে প্রোটিন টেনে নেয়। ফলে ধীরে ধীরে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, পেশী ক্ষয়ে যায় এবং হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায়। দীর্ঘমেয়াদে এটি অকাল বার্ধক্য, রোগপ্রবণতা ও শারীরিক অক্ষমতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ জন্য প্রতিদিনের তিন বেলার খাবারেই প্রোটিন থাকতে হবে—শুধু দুপুর বা রাতের খাবারে বেশি খেলে চলবে না। কারণ শরীর একবারে অনেকটা প্রোটিন ধারণ করতে পারে না, বরং সময় ধরে প্রয়োজনীয় পরিমাণে গ্রহণ ও শোষণ করে।

শুধু প্রোটিন খেলেই হবে না, সেটি সঠিকভাবে হজমও হতে হবে। হজম প্রক্রিয়ায় মুখ থেকে শুরু হয়, তাই প্রতিটি খাবার ধীরে ধীরে এবং ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া জরুরি। এতে খাবার ছোট ছোট অংশে ভেঙে যায়, এবং হজমে সহজ হয়। প্রোটিন হজমে যদি সমস্যা হয়, তাহলে পেঁপে, আম, কলা, মধু—এই ধরনের প্রাকৃতিক এনজাইমসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া যেতে পারে। এতে থাকা ‘প্রোটিজ’ নামক এনজাইম প্রোটিনকে ভেঙে অ্যামিনো অ্যাসিডে রূপান্তর করে, যা শরীর সহজে ব্যবহার করতে পারে।

প্রচুর পানি পান করাও প্রোটিন হজমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পানি হজম প্রক্রিয়াকে তরল রাখে এবং এনজাইম কার্যকরভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে খাবারের আগে কিছু পানি পান করলে তা হজমে আরও সহায়ক হয়।

সব মিলিয়ে, প্রোটিন শুধুই শরীর গঠনের উপাদান নয়—এটি একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যকর জীবনের ভিত্তি। তাই প্রতিটি বেলায়, প্রতিটি থালায় প্রোটিনের উপস্থিতি নিশ্চিত করা উচিত আমাদের সকলের।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি