৪৮ ঘণ্টায় ৯৭০ ফিলিস্তিনির প্রাণ কাড়ল দখলদার ইসরায়েল
পবিত্র রমজান মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা চালিয়েছে, যার ফলে গত ৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ৯৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার দুপুর পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা ছিল ৪৮,৫৭৭ জন, যা বুধবার দুপুরে বেড়ে ৪৯,৫৪৭ জনে পৌঁছেছে।
সোমবার রাত থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করে, যা গত জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গাজার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই হামলায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
বুধবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় জাতিসংঘের একটি ভবনে হামলা চালায়, যেখানে সংস্থাটির অন্তত একজন বিদেশি কর্মী নিহত ও পাঁচজন গুরুতর আহত হন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মধ্য গাজার গভর্নরেটের সদরদপ্তরে এই বোমা হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের এই হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনিদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়ে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলের উপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে যাতে এই নৃশংসতার অবসান ঘটে। বাংলাদেশ পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের স্বার্থে দুই রাষ্ট্র সমাধান নীতির প্রতি তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে।
গাজা উপত্যকায় চলমান সংঘর্ষের ফলে মানবিক সংকট তীব্রতর হচ্ছে। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে বিদ্যুৎ, পানি, খাদ্য ও জ্বালানির সরবরাহ বন্ধ রয়েছে, যা সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে, এবং ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
গাজায় চলমান সংঘর্ষ ও মানবিক সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন। জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে সংঘর্ষ বন্ধে উদ্যোগী হতে হবে। এছাড়া, মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য নিরাপদ করিডোর নিশ্চিত করা জরুরি।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৮ ঘণ্টায় ৯৭০ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি মানবতার জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। এই সংঘর্ষ বন্ধে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সকল পক্ষের সংযম ও সংলাপ প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখা।