যুদ্ধাবস্থায় আছি, ষড়যন্ত্রকারীরা এই সুযোগে শান্তি বিনষ্টের চেষ্টা করবেঃ ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুলিশের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা বর্তমানে একটি যুদ্ধাবস্থায় আছি, এবং এই পরিস্থিতিতে ষড়যন্ত্রকারীরা কোনো সুযোগ পেলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টা করবে, তাই পুলিশ বাহিনীকে অত্যন্ত সতর্ক এবং দায়িত্বশীল থাকতে হবে।”
ড. ইউনূস বলেন, “পুলিশ বাহিনীকে মনে রাখতে হবে যে, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ষড়যন্ত্র এবং অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা হতে পারে। তাই পুলিশ বাহিনীকে আরো বেশি সজাগ এবং প্রস্তুত থাকতে হবে।”
ড. ইউনূস অতীতে পুলিশের নানা বিতর্কিত ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, “পুলিশের ইমেজ অনেক সময় নেতিবাচক ছিল, তবে এটি রাতারাতি পাল্টানো সম্ভব নয়। কিন্তু, নতুন বাংলাদেশে পুলিশ বাহিনীকে একটি ইতিবাচক ও জনগণের প্রতি দায়িত্বশীল চিত্র উপস্থাপন করতে হবে।” তিনি পুলিশের অন্ধকার ইতিহাসকে সামনে এনে বলেন, “অতীতে পুলিশকে অনেক সময় অমানবিক আচরণের জন্য দায়ী করা হয়েছে, কিন্তু বর্তমানে পুলিশ বাহিনীকে তা পরিবর্তন করতে হবে এবং জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে।”
এছাড়া, ড. ইউনূস পুলিশের প্রতি জোর দিয়ে বলেন, “পুলিশের হাত দিয়েই দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা সম্ভব, এবং তাদের ত্যাগ ও দায়িত্বের মাধ্যমে সকল সমস্যার সমাধান হতে পারে।” তিনি জানান, নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ বাহিনীর দায়িত্ব আরও বেশি বেড়ে যাবে। “একটি সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী পুলিশ বাহিনী ছাড়া দেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখা সম্ভব নয়। নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে বিশেষ প্রস্তুতি নিতে হবে।”
ড. ইউনূস আরো বলেন, “দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এককভাবে কিছু করা সম্ভব নয়। সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং একটি টিম হিসেবে এগিয়ে আসতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “পুলিশ বাহিনীর মধ্যে থাকা একতা হতে হবে খুবই শক্তিশালী, কারণ, পুলিশ বাহিনী সরকারের সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার প্রধান হাতিয়ার।”
আগত নির্বাচন নিয়ে তিনি সতর্ক করে দেন যে, “যতই নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে, ষড়যন্ত্র এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা ততই বাড়ছে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবশ্যই সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।”
ড. ইউনূসের এই বক্তব্যে পুলিশের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং শক্তিশালী ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি পুলিশের কাছে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আরও নির্ভরযোগ্য ও কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে বলেছেন, যাতে জনগণের মধ্যে তাদের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস পুনরুদ্ধার হয়।