ট্রাম্পের হুমকির জবাবে পাল্টা হুমকি ইরানের বিপ্লবী গার্ডের
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে হুমকি প্রদান করেছেন। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) পাল্টা হুমকি দিয়ে জানিয়েছে, তারা যেকোনো হামলার বিরুদ্ধে ‘নির্ণায়ক’ জবাব দেবে। আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে ট্রাম্পের হুমকির নিন্দা জানিয়ে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
ট্রাম্পের হুমকির পর ইরানের পক্ষ থেকে পাল্টা প্রতিক্রিয়া আসতে সময় লাগেনি। আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ইরান তাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে যেকোনো আক্রমণের কঠোর জবাব দেওয়া হবে।
ট্রাম্পের হুমকির পর ইরান জাতিসংঘে অভিযোগ দায়ের করেছে। জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি নিরাপত্তা পরিষদে পাঠানো এক চিঠিতে ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উসকানিমূলক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এই ধরনের মন্তব্য আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন এবং যেকোনো আগ্রাসনের গুরুতর পরিণতি হবে। ইরাভানি জোর দিয়ে বলেন, ইরান তাদের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
ট্রাম্পের গত প্রশাসনের সময়ে ২০২০ সালে ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলাইমানি মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন। এটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি করে। এরপর ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের সাথে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে গিয়ে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যা ইরানের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বর্তমানে ইরান তাদের পারমাণবিক কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে, যা পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগের কারণ। ট্রাম্পের হুমকি ও ইরানের পাল্টা হুমকির পর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি যদি অব্যাহত থাকে, তবে তা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও সংলাপের মাধ্যমে এই সংকট সমাধানের সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রাম্প ও ইরানের বিপ্লবী গার্ডের মধ্যে হুমকি ও পাল্টা হুমকির এই পর্ব মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত সংযম প্রদর্শন ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা, যাতে সংঘর্ষ এড়ানো যায় এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা পায়।