সিরিয়ায় আইনের মূল ভিত্তি থাকবে ইসলামিক আইনশাস্ত্র
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শার’আ সম্প্রতি একটি সাংবিধানিক ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে ইসলামিক আইনশাস্ত্রকে (শরিয়াহ) দেশের আইনি ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। এই ঘোষণায় নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।
নতুন এই সাংবিধানিক ঘোষণায় মোট ৪৪টি ধারা রয়েছে, যা একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি দ্বারা প্রণীত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট আহমদ আল-শার’আ এই কমিটি গঠন করেন, যা কম সময়ের মধ্যে এই খসড়া প্রস্তুত করে। ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইসলামিক আইনশাস্ত্র দেশের আইনি ব্যবস্থার প্রধান ভিত্তি হবে এবং নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংরক্ষিত থাকবে।
সিরিয়ায় ইসলামিক আইনশাস্ত্রের প্রভাব নতুন নয়। ইতিহাস জুড়ে, সিরিয়া বিভিন্ন ইসলামিক শাসকদের অধীনে ছিল, যেমন উমাইয়া ও আব্বাসীয় খিলাফত। বর্তমানে, সিরিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ৭৫% সুন্নি মুসলিম, যা দেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে ইসলামিক আইনশাস্ত্রের গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে।
সাংবিধানিক ঘোষণায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এটি নাগরিকদের তাদের মতামত প্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করবে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
নতুন সাংবিধানিক ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া মিশ্র। কিছু দেশ এই পদক্ষেপকে সিরিয়ার সংস্কার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেখছে, যেখানে ইসলামিক মূল্যবোধ ও নাগরিক স্বাধীনতা একসঙ্গে রক্ষা করা হয়েছে। অন্যদিকে, কিছু মানবাধিকার সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, ইসলামিক আইনশাস্ত্রের প্রাধান্য নারীর অধিকার ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় প্রভাব ফেলতে পারে।
সিরিয়ার নতুন সাংবিধানিক ঘোষণা দেশটির আইনি ব্যবস্থায় ইসলামিক আইনশাস্ত্রের প্রাধান্য ও নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই পদক্ষেপ সিরিয়ার সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। ভবিষ্যতে এই ঘোষণার কার্যকারিতা ও প্রয়োগ পদ্ধতি স্পষ্ট হলে এর প্রকৃত প্রভাব মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে।