আফ্রিকায় সম্ভাবনার দ্বার খুলতে আগ্রহী বাংলাদেশ
দেরিতে হলেও আফ্রিকায় নতুন সম্ভাবনার সন্ধানে নেমেছে বাংলাদেশ। ৫৪টি দেশ এবং তিন ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির এই মহাদেশ বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য বিশাল সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। তবে এর জন্য ব্যবসায়ীদের উদ্যোগী হতে হবে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস আয়োজিত ‘লুক আফ্রিকা: এক্সপ্লোরিং নিউ হরাইজন ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তারা এই বিষয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ও আফ্রিকা উভয়ই রূপান্তরের পথে, যা পারস্পরিক লাভজনক হতে পারে। তিনি জানান, সুদানে বাংলাদেশি মালিকানাধীন একটি তুলা স্পিনিং কারখানা বিদেশে পণ্য রপ্তানি করছে, যা যুদ্ধকালেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
বাংলাদেশিরা দীর্ঘদিন ধরেই আফ্রিকায় ব্যবসা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশিরা সেখানে প্রবেশ করেছে এবং বিভিন্ন শহরে ছোট দোকান পরিচালনা করছে। এমনকি তারা গ্রাম থেকে কৃষিপণ্য সংগ্রহ করে শহরে বিক্রি করছে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির জানান, যুক্তরাষ্ট্রের এক বাণিজ্য মেলায় ইথিওপিয়ার স্টলে কাজ করছিলেন এক বাংলাদেশি। আগ্রহ প্রকাশ করলে তিনি জানান, ইথিওপিয়ায় তাদের নিজস্ব কারখানা রয়েছে। এছাড়া মরিসাস ও লেসোথোতেও বাংলাদেশি বিনিয়োগ আছে।
বাংলাদেশে ইথিওপিয়ার অনারারি কনসাল সামস মাহমুদ আফ্রিকায় ব্যবসার ক্ষেত্রে দেশটির দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ইথিওপিয়ায় চীনের একটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠী বিনিয়োগে আগ্রহী হলে, দেশটির এক মন্ত্রী তাদের আলাদাভাবে সাক্ষাৎ দেন। এক ব্যবসায়ী সর্বনিম্ন মজুরি সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রী তার আবেদন বাতিল করেন। অপর ব্যবসায়ী প্রতিবছর পরিবারের জন্য চারটি বিজনেস ক্লাস টিকিট দাবি করলে তার আবেদনও বাতিল হয়। মন্ত্রীর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, একজন বিনিয়োগকারী শ্রমিক শোষণের মানসিকতা রাখলে এবং নিজেই টিকিটের খরচ বহন করতে না পারলে, সে কীভাবে সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করবে!
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আফ্রিকা অনুবিভাগের সাবেক মহাপরিচালক এএফএম জাহিদুল ইসলাম বলেন, আফ্রিকায় ব্যবসার প্রচুর সম্ভাবনা থাকলেও চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সরাসরি সেখানে গিয়ে সুযোগ গ্রহণ করতে হবে।