বাজারে মাইকিং করে যুবদল নেতার চাঁদাবাজি, ভিডিও ভাইরালের পর বহিষ্কার
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার এমসি বাজার এলাকায় প্রকাশ্যে মাইকিং করে চাঁদাবাজির ঘটনায় যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। মাথায় লাল কাপড় ও হাতে রামদা নিয়ে অর্ধশতাধিক অনুসারীসহ এলাকায় মহড়া দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেন তিনি। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের এমসি বাজার এলাকায় হ্যান্ড মাইকে চাঁদাবাজির ঘোষণা দেন যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম। তিনি উপজেলার মুলাইদ গ্রামের নূরু বেপারীর ছেলে এবং শ্রীপুর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও তেলিহাটি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব।
বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, হঠাৎ করেই জাহাঙ্গীর আলম তার অনুসারীদের নিয়ে বাজারে হাজির হন। তাদের সবার মাথায় লাল কাপড় বাঁধা এবং মুখ গামছা দিয়ে ঢাকা ছিল। এরপর তারা হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা দিয়ে বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার নির্দেশ দেন। কিছুক্ষণ পরই রামদার ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক টাকা আদায় শুরু করেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে জাহাঙ্গীর আলমকে বলতে শোনা যায়, “জাহাঙ্গীর ভাইয়ের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন।” আরও শোনা যায়, “আজকের পর থেকে আমি জাহাঙ্গীর যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন এমসি বাজার আমার নিয়ন্ত্রণে চলবে। এখনই আমার লোকজন খাজনা উঠানো শুরু করবে। কেউ বাধা দিলে ভয়াবহ পরিণতি হবে।”
এ ঘটনার সময় আতঙ্কে অনেকে দোকানপাট বন্ধ করে পালিয়ে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানি জানান, “রামদার ভয় দেখিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। বাধা দেওয়ার সাহস পাইনি, প্রাণ বাঁচাতেই টাকা দিয়েছি।”
এ নিয়ে গাজীপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান মোল্লা বলেন, “এই ধরনের কাজকে দল কোনোভাবেই সমর্থন করে না। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে জাহাঙ্গীর আলমকে যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি বহিষ্কার করেছে।”
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, “এমসি বাজার এলাকায় কিছু দুস্কৃতিকারী প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করেছে ও দোকানদারদের ভয়ভীতি দেখিয়েছে। আমরা বিষয়টি অবগত হয়েছি এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে।”
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তার বা নতুন আইনি পদক্ষেপের খবর পাওয়া যায়নি। তবে এলাকাবাসীর দাবি, অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।