রবিবার, ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫| রাত ৮:৪৪

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চেয়ে ট্রাইব্যুনালে যাবে শহিদ পরিবার।

প্রতিবেদক
staffreporter
নভেম্বর ২৯, ২০২৪ ২:০৫ অপরাহ্ণ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চেয়ে ট্রাইব্যুনালে যাবে শহিদ পরিবার।

১৬ বছর, দীর্ঘ এ সময় ধরে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়ার অন্ধকারে দাঁড়িয়ে আছেন শহিদদের পরিবারগুলো। তাদের হৃদয়ের কান্না যেনো থামছেই না। ক্ষোভ, যন্ত্রণা আর বঞ্চনার দীর্ঘপথ পেরিয়ে অবশেষে তারা দাঁড়িয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দরজায়। তাদের অভিযোগ, সরকার কখনো তাদের পাঁচ মিনিটও সময় দেয়নি, তাদের কষ্টের কথা শোনেনি।

শহিদ কর্নেল কুদরত ইলাহীর সন্তান অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান, সংবাদ সম্মেলনে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তুলে ধরলেন তাঁদের অসহায়তার চিত্র। তিনি বলেন, “আমরা যারা অভিযোগ করবো, তাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী মানুষগুলো রয়েছে। কিন্তু আমরা আশা করি সরকার আমাদের নিরাপত্তা দেবে।” তাদের অভিযোগের তালিকায় শেখ ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ অনেকেই আছেন। আরও বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, সাবেক ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী হাসিনাও এ হত্যাকাণ্ডের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শহিদ লে. কর্নেল লুৎফুর রহমান খানের মেয়ে ফাবলিহা বুশরা, শহিদ লে. কর্নেল কাজী রবি রহমানের স্ত্রী ডা. ফৌজিয়া রশিদ, শহিদ কর্নেল এরশাদের ভাই ডা. মামুনসহ আরও অনেকে। তাঁরা সবাই একই আহ্বান জানালেন—ন্যায়বিচার চাই।

অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান আক্ষেপের সুরে বলেন, “১৬ বছর ধরে মামলাটি আপিল ডিভিশনে আটকে আছে, অথচ আমাদেরকে কোনো তথ্য জানানো হয়নি। আমরা, যারা প্রিয়জন হারিয়েছি, আমরা যদি না জানি, তাহলে দেশের মানুষ কীভাবে জানবে?”

শহিদদের স্বজনরা আরও দাবি করেন, এই হত্যাকাণ্ড ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর নীলনকশা অনুযায়ী ঘটেছে। তাদের মতে, “শেখ হাসিনা সব জানতেন।”

বক্তব্যে শহিদ পরিবারের হৃদয়ের গভীর ক্ষোভ ও যন্ত্রণা ফুটে ওঠে। তারা বললেন, “আমরা চাই, ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘শহিদ সেনা দিবস’ ঘোষণা করা হোক। এদিন যেনো জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকে।”

শহিদ সুবেদার মেজর নুরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল আলম হান্নান বলেন, “আমার বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। অথচ আমাদের শুধু বঞ্চনাই পেতে হয়েছে। মা মারা যাওয়ার মাত্র সাত দিনের মধ্যে আমাদের সরকারি বাসা ছাড়তে হয়েছে। এত নিষ্ঠুরতা কেন?”

এক বুক অশ্রু আর বুকভরা ব্যথা নিয়ে তারা দাঁড়িয়ে আছেন বিচারের প্রহর গুনে। তাদের কণ্ঠে শুধু একটাই দাবি—অন্যায়কারীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক। এই বিচার যেনো তাদের হারানো স্বজনদের আত্মত্যাগের প্রতি জাতির শ্রদ্ধা হয়ে দাঁড়ায়।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - সর্বশেষ