মুসলিমপ্রধান দেশের নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের ইঙ্গিত ট্রাম্পের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত এক নির্বাহী আদেশ নিয়ে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এতে মুসলিমপ্রধান ও আরব দেশগুলোর নাগরিকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হতে পারে। মার্কিন নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলো এরই মধ্যে এই আদেশের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সোমবার দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ট্রাম্প এই নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এতে বলা হয়েছে, যেসব দেশের নিরাপত্তা যাচাই ও তল্লাশি ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ, সেসব দেশের নাগরিকদের ভিসা প্রদান এবং যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সাময়িক বা স্থায়ীভাবে স্থগিত করা হতে পারে।
এডিসি (আমেরিকান-আরব অ্যান্টি-ডিসক্রিমিনেশন কমিটি) জানিয়েছে, নতুন আদেশটি ২০১৭ সালে ট্রাম্পের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার আইনি কাঠামোর ওপর ভিত্তি করেই তৈরি। তবে নতুন আদেশটি আরও বিস্তৃত এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বিদেশিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আরও বেশি করে দিয়েছে। এডিসি ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য ২৪ ঘণ্টার একটি হটলাইন চালু করেছে।
এনআইএসি (ন্যাশনাল ইরানিয়ান আমেরিকান কাউন্সিল) বলেছে, এই নির্বাহী আদেশ যুক্তরাষ্ট্রের পরিবারগুলোকে প্রিয়জনদের থেকে বিচ্ছিন্ন করবে এবং শিক্ষার্থী ও কর্মীদের ভিসা বাতিলের সুযোগ বাড়াবে। এর ফলে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির হারও কমে যেতে পারে।
২০১৭ সালে ট্রাম্প সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। এবারের আদেশে আরও কঠোর পদক্ষেপের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কৃতি, সরকার ও নীতির প্রতি শত্রুতাপূর্ণ মনোভাব পোষণকারী ব্যক্তিদের ভিসা বা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এডিসি এবং অন্যান্য অধিকার সংগঠনগুলো এই আদেশের আইনি চ্যালেঞ্জ করার পরিকল্পনা করছে। এডিসির নির্বাহী পরিচালক আবেদ আইয়ুব বলেছেন, এই আদেশটি বিপজ্জনক নজির স্থাপন করেছে। এটি কেবল ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে নয়, ভবিষ্যতেও ডানপন্থী বা বামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর ওপর একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারে।
ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণায় বারবার বলেছেন, নির্দিষ্ট দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি নির্দিষ্ট মতাদর্শের (যেমন সাম্যবাদী, সমাজতান্ত্রিক) ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বন্ধ করতে তিনি কঠোর পদক্ষেপ নেবেন। এই আদেশ সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নেরই অংশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এদিকে, হোয়াইট হাউস ট্রাম্পের এই আদেশ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে এ আদেশ কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতি আরও কঠোর হবে এবং ভিসা বাতিলের ঘটনা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।