বেক্সিমকো ও এস আলম গ্রুপের ঋণ সংকটে ঝুঁকিতে এক ডজনের বেশি ব্যাংক
আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ সুবিধাভোগী হিসেবে পরিচিত বেক্সিমকো ও এস আলম গ্রুপ বর্তমানে শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় উঠে এসেছে। এই দুই গ্রুপের কারণে অন্তত এক ডজন ব্যাংক আর্থিক সংকটে পড়েছে, যা পুরো ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতার জন্য বড় ধরনের হুমকি সৃষ্টি করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, শীর্ষ ১০ ঋণখেলাপির মোট খেলাপি ঋণ ৫১ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা, যার মধ্যে বেক্সিমকো ও এস আলমের সম্মিলিত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩৪ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা। এ দুই গ্রুপের ঋণ ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের ১২ শতাংশের বেশি।
বেক্সিমকো ২৩ হাজার ১২০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নিয়ে তালিকার শীর্ষে এবং এস আলম গ্রুপ ১১ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। তবে ব্যাংকারদের মতে, এই দুই গ্রুপের প্রকৃত ঋণের পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ১৫.১৭ শতাংশ।
এস আলম গ্রুপ চারটি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেখানে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ৯৩ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, বেক্সিমকোর কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জনতা ও সোনালী ব্যাংক। বেক্সিমকো ১৬টি ব্যাংক ও সাতটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে ৫০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, শীর্ষ তিন ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেনের মতে, সরকারের উচিত বিদেশে থাকা এসব গ্রুপের সম্পদ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হওয়ার মূল কারণ সরকারের জবাবদিহিতার অভাব। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন।