১২ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ওপর বিশ্বের ১২টি দেশের নাগরিকদের জন্য সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার (৪ জুন) এক নির্বাহী আদেশে তিনি এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে আরও ৭টি দেশের নাগরিকদের জন্য কঠোর ভ্রমণ বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী সোমবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। যেসব দেশের নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না, সেগুলো হলো—আফগানিস্তান, চাদ, কঙ্গো, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, মিয়ানমার, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেন। আর যে সাতটি দেশের ওপর অতিরিক্ত বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো—বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা।
এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, “আমাকে এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে যাতে আমাদের দেশের জনগণকে নিরাপদ রাখা যায়।” হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, সম্প্রতি কোলোরাডোর বোল্ডারে একটি ইসরায়েলপন্থি সমাবেশে হামলার ঘটনাই তাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে প্ররোচিত করেছে। তিনি বলেন, “এমন হামলা প্রমাণ করে, যাচাইকৃত নয় এমন বিদেশিদের প্রবেশ কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “ইউরোপে যা ঘটেছে, তা আমরা আমেরিকায় হতে দেবো না। এমন কোনো দেশের নাগরিকদের আমরা গ্রহণ করতে পারি না, যাদের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা সম্ভব নয়।” ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, “যারা আমাদের ক্ষতি করতে চায়, তাদের আমাদের দেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না।”
অনেকেই মনে করছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ তার ২০১৭ সালের বিতর্কিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞারই ধারাবাহিকতা। সে সময় তিনি মুসলিমপ্রধান সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন। ওই তালিকায় ছিল ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া এবং ইয়েমেন। তখন বহু যাত্রী বিমানবন্দরে আটকা পড়েন, কেউ কেউ ফ্লাইটেই উঠতে পারেননি, যার ফলে শিক্ষার্থী, গবেষক ও পরিবারভিত্তিক ভ্রমণকারীরা বিপাকে পড়েন।
ট্রাম্প সেই সময়ও নিষেধাজ্ঞাকে ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয়’ বলে দাবি করেছিলেন। যদিও তিনি ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী থাকাকালীন প্রকাশ্যে মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। পরে বিভিন্ন আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত তার সংশোধিত নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে, যেখানে ইরান, ইয়েমেন, সোমালিয়া, সিরিয়া, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া এবং ভেনেজুয়েলার কিছু সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়।