জার্মান আদালতের রায়: সীমান্তে আশ্রয়প্রত্যাশীদের ফিরিয়ে দেওয়া অবৈধ
জার্মানির রাজধানী বার্লিনের একটি প্রশাসনিক আদালত এক রায়ে জানিয়েছে, দেশটির সীমান্ত থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ফেরত পাঠানো ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ডাবলিন পদ্ধতির লঙ্ঘন। এই রায়ের মাধ্যমে সরকারের নতুন অভিবাসন নীতিকে চ্যালেঞ্জ জানানো হলো। তবে সরকার জানিয়েছে, সীমান্তে অভিবাসন রোধে ‘পুশব্যাক’ নীতির বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকবে।
আদালতের রায় অনুযায়ী, ইইউর ডাবলিন পদ্ধতি অনুসরণ না করে সীমান্ত থেকে কাউকে ফেরত পাঠানো বেআইনি। এই রায় নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসের জন্য একটি বড় ধাক্কা, যিনি অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন এবং দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সীমান্তে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
রায়ের প্রেক্ষাপট তৈরি হয় ৯ মে, যখন তিনজন সোমালি নাগরিক পোল্যান্ড থেকে জার্মানিতে ট্রেনে প্রবেশের সময় সীমান্তে আটক হন এবং সেদিনই তাদের ফেরত পাঠানো হয়। তারা জানিয়েছিলেন, জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন করতে চান। কিন্তু পুলিশ তাদেরকে ‘তৃতীয় একটি নিরাপদ দেশ’ থেকে আগত হিসেবে বিবেচনা করে ফেরত পাঠায়। আদালত জানিয়েছে, ডাবলিন পদ্ধতি অনুযায়ী, কোনো আশ্রয়প্রার্থীকে যাচাই না করে ফেরত পাঠানো ঠিক নয়, বিশেষত সীমান্ত চৌকিতেও এই নিয়ম প্রযোজ্য।
এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডোব্রিন্ডট বলেছেন, আদালতের রায় নির্দিষ্ট একটি ঘটনার জন্য প্রযোজ্য, এবং সরকার নতুন অভিবাসন নীতির বাস্তবায়ন চালিয়ে যাবে। তিনি জানান, ওই তিন অভিবাসী তিনবার সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা করেন, এবং কেবল তৃতীয়বার আশ্রয়ের আবেদন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এফডি (AfD) দলের উত্থান থামাতে ম্যার্ৎস অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে চান বলে জানিয়েছেন, কারণ দলটি সর্বশেষ নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য ভোট পেয়েছে।
তবে ম্যার্ৎসের নীতির বিরুদ্ধে সমালোচনা উঠে এসেছে গ্রিন পার্টিসহ নানা মহল থেকে। গ্রিন পার্টির আইনপ্রণেতা আইরিন মাইহালেক বলেন, আদালতের রায় প্রমাণ করেছে সরকারের নীতি ব্যর্থ হবে। এটি ইউরোপীয় আইন অমান্য এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করার ঝুঁকি তৈরি করছে।
ডাবলিন পদ্ধতিতে আশ্রয়ের আবেদন কোথায় মূল্যায়িত হবে তা নির্ধারিত হয় ওই ব্যক্তির ইউরোপে প্রথম প্রবেশের স্থান এবং আঙুলের ছাপ সংগ্রহের ভিত্তিতে। এই নিয়ম অনুযায়ী কাউকে সীমান্ত থেকে সরাসরি ফেরত পাঠানো অনুচিত। অভিবাসনপন্থী বিভিন্ন সংগঠনও এই রায়ের প্রশংসা করেছে এবং সরকারের নতুন নীতির বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।