তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে আগুন নিয়ে না খেলতে চীনের হুঁশিয়ারি
তাইওয়ানকে ঘিরে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা আবারও চরমে পৌঁছেছে। চীন যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তাইওয়ান ইস্যুটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এতে হস্তক্ষেপ ‘আগুন নিয়ে খেলার’ শামিল। রবিবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
এই বক্তব্য এসেছে এমন সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত শাংরি-লা ডায়ালগে চীনকে ‘এশিয়ার জন্য হুমকি’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি অভিযোগ করেন, চীন বিশ্বাসযোগ্যভাবে সামরিক প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং তাইওয়ান আক্রমণের মহড়া চালাচ্ছে, যার মাধ্যমে এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্য বদলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড দাবি করে চীন দীর্ঘদিন ধরে বলছে, প্রয়োজনে বলপ্রয়োগের মাধ্যমেও দ্বীপটিকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে একীভূত করা হবে। তবে তাইওয়ানের গণতান্ত্রিক সরকার এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার একমাত্র তাইওয়ানের জনগণের।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হেগসেথের মন্তব্যকে উসকানিমূলক বলে মন্তব্য করেছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে বলেছে, “তাইওয়ানকে চীনের বিরুদ্ধে কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন না এবং আগুন নিয়ে খেলবেন না।” বেইজিং আরও বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রই এশিয়া-প্যাসিফিকে অস্থিতিশীলতার মূল উৎস এবং দক্ষিণ চীন সাগরে অস্ত্র মোতায়েন করে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে।
চীন অভিযোগ করেছে, হেগসেথ শান্তির আহ্বানকে অগ্রাহ্য করেছেন, অপমানজনক মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন এবং গোষ্ঠী রাজনীতির মাধ্যমে শীতল যুদ্ধের মানসিকতা ছড়াচ্ছেন। এ নিয়ে তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদও জানিয়েছে।
দক্ষিণ চীন সাগরেও চীন ও ফিলিপাইনের মধ্যে দ্বীপ ও প্রবালপ্রাচীর ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এসব অঞ্চলে দুই দেশের কোস্টগার্ডের মধ্যে প্রায়ই টহল ঘিরে উত্তেজনা দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্র ওই অঞ্চলে নৌ চলাচলের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ জানালেও, চীন বলছে তারা সবসময় আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় আলোচনা ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষপাতী।
চীনের মতে, দক্ষিণ চীন সাগরে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হলো যুক্তরাষ্ট্র।
উল্লেখ্য, চলতি বছর চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জুন শাংরি-লা ডায়ালগে অংশ নেননি। তাঁর পরিবর্তে একটি নিম্নপদস্থ প্রতিনিধি দল সম্মেলনে পাঠানো হয়। ২০১৯ সালের পর এই প্রথম চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে উপস্থিত থাকলেন না, যদিও ২০২০ ও ২০২১ সালে কোভিডের কারণে সম্মেলন বাতিল হয়েছিল।