আইএ না থাকায় সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগে অনাগ্রহ, চতুর্থবারের মতো সময় বাড়াচ্ছে সরকার
সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা, কারণ দরপত্রে ইম্পলিমেন্টেশন এগ্রিমেন্ট (আইএ) নেই। টানা চার দফায় দরপত্র আহ্বান করেও কোনোটি চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। বিদ্যুৎ বিভাগ ও পিডিবির সূত্র বলছে, এবার সময় বাড়িয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড আয়োজিত প্রি-বিড বৈঠকে অংশ নেওয়া বিনিয়োগকারীরা আইএ অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ করেন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিদ্যমান দরপত্রে আইএ-এর মতো একই ধরণের কিছু বিধান রাখা হয়েছে। তবু বিনিয়োগকারীরা এটিকে যথেষ্ট মনে করছেন না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইএ না থাকলে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে, কারণ এতে উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান সরকারের কাছ থেকে বিনিয়োগ ফেরতের নিশ্চয়তা পায় না।
সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, আগের সরকারগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে আইএ করত, যেখানে বিদ্যুৎ বিক্রির অর্থ পরিশোধে সরকারের দায়িত্ব নির্দিষ্ট থাকত। কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে কেন আইএ বাদ দেওয়া হলো, তা পরিষ্কার নয়। তিনি জানান, সরকার এখন নীতিগতভাবে আইএ যুক্ত করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
সাধারণত, বিদ্যুৎ কেনার জন্য সরকার পিপিএ চুক্তি করে, কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আলাদা করে আইএ করে। এতে বলা থাকে— পিডিবি অর্থ দিতে না পারলে সরকারের পক্ষ থেকে সেই অর্থ দেওয়া হবে, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নিশ্চিত করা হবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ে সহায়তা দেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পিডিবির একার পক্ষে ডলার সংস্থান সম্ভব না, তাই সরকারের নিশ্চয়তা ছাড়া আন্তর্জাতিক দরপত্রে কেউ এগিয়ে আসবে না। আইএতে প্রকল্পের সময়সীমা, পরিবেশগত ছাড়পত্রের বাধ্যবাধকতা এবং বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থাও উল্লেখ থাকে।
প্রথম দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর। এরপর আরও কয়েকটি ধাপে দরপত্র ডাকা হলেও কোনও সফলতা আসেনি। বর্তমান সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে একর্ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিস লিমিটেডের সিইও আব্দুর রাজ্জাক রুহানী বলেন, ‘আইএ না থাকলে ব্যাংকগুলো অর্থায়নে আগ্রহ দেখাবে না। পিডিবি গত কয়েক বছর ঠিকমতো অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না, এ জন্যই আমরা আইএ চাইছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘চুক্তি বাতিলের একটি ধারা ৯ বছরের জন্য তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে যদি আইএ-এর শর্ত সংযুক্ত করা হয়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা নতুন করে আগ্রহী হবেন।’