বিইআরসি পুনর্গঠনের দাবি ক্যাবের, উচ্চ আদালতে যাওয়ার হুমকি
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অনিয়ম এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়। সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, বিইআরসির সদস্যরা আইনের পাশাপাশি আদালতের আদেশও লঙ্ঘন করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
ক্যাবের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, বিইআরসি যদি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করে, তাহলে সরকারকে তাদের অপসারণের পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায়, কমিশনের বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় থাকবে না। তিনি আরও বলেন, আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে গণশুনানি ছাড়াই সরকারি এলপিজির দাম বাড়িয়ে বিইআরসি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে।
আলোচনাসভায় ‘প্রস্তাবিত বাংলাদেশ জ্বালানি রূপান্তর নীতি ২০২৪’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাবের গবেষণা সমন্বয়ক প্রকৌশলী শুভ কিবরিয়া। প্রবন্ধে শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। ড. শামসুল আলম অভিযোগ করেন, গণশুনানিতে আপত্তি উঠলেও সেগুলো উপেক্ষা করে নতুন শিল্পে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, যা ভোক্তা স্বার্থের পরিপন্থী।
তিনি আরও বলেন, পূর্ববর্তী সরকারগুলোর সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত থেকে বিপুল অর্থ লুট হলেও এ বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। খাতটির ‘সিস্টেম লস’ কমাতে কিংবা দুর্নীতি রোধে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগও দেখা যাচ্ছে না। তার মতে, জ্বালানি খাত এখন লুণ্ঠনমূলক ব্যয়ের ওপর দাঁড়িয়ে আছে এবং এতে জনগণের অধিকার নিশ্চিত করা হচ্ছে না।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া। এতে আরও বক্তব্য রাখেন ড. সৈয়দ মিজানুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজিমউদ্দিন খান। বক্তারা জ্বালানি খাতে স্বচ্ছতা, জনগণের মালিকানা ও সুশাসন নিশ্চিত করার দাবি জানান এবং ভোক্তাদের কাছে যৌক্তিক খরচে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।