ভারতের নতুন হামলায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি, গুজরানওয়ালায় ড্রোন ভূপাতিত করল পাকিস্তান
আজাদ কাশ্মির ও পাকিস্তানের অন্যান্য জায়গায় হামলার একদিন পর, বৃহস্পতিবার (৮ মে) আবারও পাকিস্তানে হামলা চালিয়েছে ভারত। দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশের গুজরানওয়ালার গুজরাট জেলার ডিঙ্গা এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পাক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।
খবরে বলা হয়, একটি ড্রোন ওই এলাকায় পাঠানো হয় যা গিয়ে একটি মাঠে আছড়ে পড়ে। ঘটনার পরপরই পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ড্রোনটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ শুনে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, গুজরানওয়ালার আকাশে উড়ন্ত একটি ড্রোনকে লক্ষ্য করে পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে মিসাইল ছোড়া হয় এবং সেটি সফলভাবে ভূপাতিত করা হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মারখোর টাইমসও ড্রোনটি ভূপাতিত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে।
তবে ড্রোনটি কোথা থেকে এসেছিল, তা স্পষ্ট করে জানায়নি কোনো সংবাদমাধ্যম। পাকিস্তান সরকারও এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি। জিও নিউজ ছাড়া মূলধারার অন্যান্য সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে তেমন কোনো প্রতিবেদন দেখা যায়নি।
এই ঘটনার আগে মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভারত আজাদ কাশ্মিরসহ পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা চালায়। তার পরপরই পাকিস্তান পাল্টা জবাব দেয়। এ সময় পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। দুই দেশের বিমানের মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী সম্মুখ লড়াই (ডগ ফাইট) হয়, যেটিকে আধুনিক সময়ের সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘ যুদ্ধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন পাকিস্তানের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, পাকিস্তানের ১২৫টি যুদ্ধবিমান এই পাল্টা হামলায় অংশ নেয়, যদিও দুই দেশের বিমানই একে অপরের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেনি। দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে আক্রমণ চালানো হয়। বিমান হামলার সম্ভাব্য এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার ফলে হতাহতের সংখ্যা সীমিত রাখা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে এই টানটান উত্তেজনার মধ্যেই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আগারঘচি বুধবার সকালে নয়াদিল্লি সফরে পৌঁছেছেন। এর আগে তিনি পাকিস্তান সফর করেন। তেহরান থেকে জানানো হয়েছে, তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার চেষ্টা করবেন।
২০১৯ সালের মত এবারও দুই দেশ সীমান্ত পার হয়ে বিমান চালানোর অনুমতি দেয়নি তাদের পাইলটদের। তাই সরাসরি সংঘর্ষ হলেও সীমান্ত লঙ্ঘন হয়নি বলে জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি যতই উত্তপ্ত হোক, দুই দেশই এখন পর্যন্ত বড় পরিসরের যুদ্ধে জড়াতে চাইছে না বলেই মনে করা হচ্ছে।