ফিচ রেটিংসের সঙ্গে বৈঠকে ঋণমান পুনর্বিবেচনার অনুরোধ বাংলাদেশ ব্যাংকের
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ফিচ রেটিংসের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে দেশের সাম্প্রতিক আর্থিক উন্নয়ন ও অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে বাংলাদেশের ঋণমান পুনর্বিবেচনার জন্য সংস্থাটিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জাকির হোসেন চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, রিজার্ভ পরিস্থিতি ও ডলারের বিনিময় হার ইতিবাচক দিকে থাকায় রেটিং সংস্থাগুলো সন্তোষ প্রকাশ করেছে। ফলে ঋণমান উন্নয়নের বিষয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংক।
তিনি আরও বলেন, ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পা রাখবে। এই উত্তরণে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বৈদেশিক ঋণ সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। তাই সময়োপযোগী ও সঠিক রেটিং অত্যন্ত জরুরি।
এর আগে গত সপ্তাহেও আরেক মার্কিন রেটিং সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের সঙ্গে একইধরনের বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। উল্লেখযোগ্য যে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে এসঅ্যান্ডপি বাংলাদেশের ঋণমান ‘বি বি মাইনাস’ থেকে কমিয়ে ‘বি প্লাস’ করে। ফিচ রেটিংসও ২০২৩ সালের মে মাসে একই ধরনের অবনমন করেছিল, যদিও তখন দেশের অর্থনীতি বিষয়ে পূর্বাভাস ছিল স্থিতিশীল।
এদিন আরিফ হোসেন খান আরও জানান, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত কোনো নতুন মুদ্রা ছাপা হয়নি। নতুন ডিজাইনের নোট ছাপাতে গড়ে ১৮ মাস সময় লাগে। বাংলাদেশ ব্যাংক বর্তমানে একযোগে ৯ ধরনের নতুন নোট ছাপানোর উদ্যোগ নিয়েছে, যার প্রভাব আগামী মে মাসে বাজারে দেখা যাবে।
তিনি জানান, কিছু দুর্বল ব্যাংকের অনিয়মের কারণে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংকট সামাল দিতে টাকা সরবরাহ করেছে। দুর্বল ব্যাংকগুলোর অবস্থা পর্যালোচনায় একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে এবং তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে এবং রফতানি ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধির ফলে ডলারের বিনিময় হারও নিয়ন্ত্রণে আসছে।
আপনি কি ভাবছেন, এসব উদ্যোগে দেশের ঋণমান পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে?