দীর্ঘদিন বাইকের ট্যাঙ্কে রাখা পেট্রোল কি ক্ষতিকর? জানুন বিস্তারিত
অনেক সময় নানা ব্যস্ততা বা পরিস্থিতির কারণে প্রিয় বাইকটি দিনের পর দিন পার্কিংয়ে পড়ে থাকে। হয়তো চালানোর সময় পাওয়া যাচ্ছে না, আবার ঠিকভাবে যত্ন নেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। এমন অবস্থায় একটা সাধারণ জিজ্ঞাসা হচ্ছে—বাইকের ট্যাঙ্কে যে পেট্রোল পড়ে থাকে, তা কতদিন ভালো থাকে? অনেকেই হয়তো জানেন না, দীর্ঘদিন বাইক না চালালে ট্যাঙ্কে জমে থাকা পেট্রোল ইঞ্জিনের ক্ষতি করতে পারে।
ধরুন, আপনি সর্বশেষ বাইকের ট্যাঙ্ক ফুল করে রেখেছেন, কিন্তু মাসের পর মাস বাইকটি চালানো হয়নি। সেই অবস্থায় আগের ভরানো জ্বালানিই ট্যাঙ্কে রয়ে গেছে। হুট করে বাইক নিয়ে বের হয়ে সেই পুরোনো পেট্রোলেই বাইক চালিয়ে দিলেন। এই পেট্রোল কিন্তু তখন আগের মতো কার্যকর নাও থাকতে পারে এবং ইঞ্জিনে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাইকের ট্যাঙ্কে পেট্রোল সাধারণভাবে ৩ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে। তবে এটি নির্ভর করে পেট্রোলের গুণমান, বাইক কোথায় রাখা আছে, বাইকের ট্যাঙ্কে জ্বালানির পরিমাণ এবং পরিবেশের উপর। গরম বা আর্দ্র আবহাওয়ায়, কিংবা খোলা জায়গায় বাইক রাখলে পেট্রোল দ্রুত নষ্ট হতে পারে। কারণ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পেট্রোলের হালকা উপাদানগুলো বাষ্প হয়ে উড়ে যায় এবং বাকি উপাদানগুলো ঘন হয়ে পড়ে। এতে গ্যাসোলিনের গঠন পরিবর্তিত হয়, পেট্রোল অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় মাড়ি বা বার্নিশ জাতীয় পদার্থ তৈরি করে, যা ইঞ্জিনের ভিতরে জমে গিয়ে কার্যকারিতা হ্রাস করে।
এ কারণে বাইক দীর্ঘদিন না চালানোর সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। সম্ভব হলে বাইকের ট্যাঙ্ক ফাঁকা করে রাখা, বা ফুয়েল স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। বাইক দীর্ঘদিন চালাবেন না জেনে থাকলে কম জ্বালানি রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। অথবা মাঝে মাঝে স্টার্ট দিয়ে ইঞ্জিন সচল রাখা যেতে পারে।
সঠিক যত্ন না নিলে জ্বালানির মান নষ্ট হয়ে ইঞ্জিনের জ্বালানি ছাঁকনি, ইনজেকশন বা কার্বুরেটরে সমস্যা তৈরি করতে পারে, যার মেরামত ঝামেলাপূর্ণ এবং ব্যয়বহুল হতে পারে। তাই যারা বাইক দীর্ঘদিন ব্যবহার করেন না, তাদের উচিত সময়মতো ফুয়েল চেক করা এবং প্রয়োজনে পুরোনো পেট্রোল ফেলে দিয়ে নতুন পেট্রোল ভরানো।