সৌদির সঙ্গে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির উদ্যোগ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব আরও সুসংহত করতে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে হোয়াইট হাউস।
সৌদি আরবের কাছে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল অঙ্কের অস্ত্র বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই প্রস্তাব আগামী মে মাসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিয়াদ সফরের সময় সৌদি প্রশাসনের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করা হবে।
বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা রয়টার্স, ছয়টি সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে ট্রাম্প সৌদি আরব ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতার ভ্রমণ করবেন।
সূত্র অনুযায়ী, এই বিশাল অস্ত্র চুক্তিতে যুক্ত থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনকারী বড় বড় কোম্পানি — লকহিড মার্টিন, আরটিএক্স কর্পস (সাবেক রেথিয়ন), বোয়িং, নর্থরপ গ্রুমম্যান এবং জেনারেল অটোমেটিকস।
ট্রাম্পের সফরে এসব কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারাও প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
চুক্তির আওতায় সৌদি আরবের কাছে সি-১৩০ পরিবহন বিমান, আধুনিক মিসাইল সিস্টেম, রাডারসহ বিভিন্ন ধরণের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের কথা রয়েছে।
এছাড়া, রিয়াদ সরকার বহুল প্রতীক্ষিত এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়েও আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার চেষ্টা করে আসছে।
তবে রয়টার্সের সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে, ট্রাম্পের এবারের সফরেই সৌদি আরবের সঙ্গে এফ-৩৫ বিক্রির কোনো চূড়ান্ত চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
এর পেছনে রয়েছে ইসরাইলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ‘কোয়ালিটেটিভ মিলিটারি এজ’ (কিউএমই) চুক্তি, যার আওতায় ইসরাইলকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের তুলনায় উন্নত মার্কিন সামরিক প্রযুক্তি সরবরাহের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
ইসরাইল ইতোমধ্যে ৯ বছর আগে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পেয়ে গেছে এবং বর্তমানে এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের একাধিক স্কোয়াড্রন দেশটির বিমানবাহিনীতে যুক্ত রয়েছে।
চুক্তিটি নিয়ে এখন পর্যন্ত হোয়াইট হাউস কিংবা সৌদি আরবের সরকারি যোগাযোগ দপ্তর থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এদিকে রয়টার্সের কাছে তথ্য দেওয়া ছয়টি সূত্রই এই স্পর্শকাতর ইস্যুতে নিজেদের পরিচয় গোপন রাখার অনুরোধ করেছে।
তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা ওয়াশিংটন-রিয়াদ সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
এ লক্ষ্যে সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা চাহিদা পূরণে যুক্তরাষ্ট্র তার ভূমিকা অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও ২০১৭ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট মেয়াদের সময় সৌদি সফরে গিয়ে রিয়াদের সঙ্গে ১১০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির বিশাল চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নতুন এই উদ্যোগকে তাই ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্য নীতির ধারাবাহিক অংশ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।