বুধবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৫| রাত ৪:৫০

যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভের নতুন ঢেউ: হাজারো মানুষের রাস্তায় প্রতিবাদ

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ২২, ২০২৫ ৯:৪১ অপরাহ্ণ
যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভের নতুন ঢেউ: হাজারো মানুষের রাস্তায় প্রতিবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভের নতুন ঢেউ: হাজারো মানুষের রাস্তায় প্রতিবাদ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক নীতি ও কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দেশটির বিভিন্ন শহরে আবারও ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক, শিকাগোসহ দেশের প্রধান শহরগুলোতে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি, সরকারি চাকরিতে ছাঁটাই, গাজা ও ইউক্রেন নীতির বিরোধিতা করে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেছেন।

বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু ছিল হোয়াইট হাউসের বাইরে, টেসলা ডিলারশিপের সামনে এবং বিভিন্ন শহরের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় স্থানগুলো। এই বিক্ষোভ ‘৫০৫০১’ নামে পরিচিত, যার অর্থ ‘৫০টি প্রতিবাদ, ৫০টি অঙ্গরাজ্য, ১টি আন্দোলন’। এই আন্দোলন মার্কিন বিপ্লবের ২৫০তম বার্ষিকীকে কেন্দ্র করে আয়োজিত হয়েছে, যা ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার সংগ্রামের স্মরণ বহন করে। বার্তাসংস্থা বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা তাদের হাতে বিভিন্ন বার্তা সম্বলিত পোস্টার ও ব্যানার বহন করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘রাজতন্ত্রকে না বলুন’, যা ঐতিহাসিকভাবে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন বিপ্লবের প্রতীকী বার্তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এছাড়া ‘শ্রমিকদের অবশ্যই শক্তিশালী হতে হবে’, ‘ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করুন’, ‘অভিবাসীদের সুরক্ষা দাও, পৃথিবীকে রক্ষা করো’, এবং ‘অভিবাসীদের স্বাগত জানাও’—এমন স্লোগান সম্বলিত পোস্টার বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের হাতে দেখা গেছে। এই স্লোগানগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ ও প্রত্যাশাকে প্রতিফলিত করে।

‘৫০৫০১’ আন্দোলনের আয়োজকরা ইতোমধ্যে আগামী ১ মে আরেকটি বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘মে দিবসের শক্তি’। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তারা শ্রমিক অধিকার, অভিবাসীদের ন্যায্য অধিকার, এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি ও পরিবেশ সুরক্ষার দাবি আরও জোরালোভাবে তুলে ধরার পরিকল্পনা করছেন।

ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভক্তির একটি প্রতিচ্ছবি। বিশেষ করে তাঁর অভিবাসন নীতি, যার মাধ্যমে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ এবং বিতারণের হুমকি দেওয়া হয়েছে, তা ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এছাড়া সরকারি চাকরিতে ছাঁটাই এবং গাজা ও ইউক্রেন সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়েও অনেক মার্কিন নাগরিক ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন শ্রমিক সংগঠনের সদস্য, অভিবাসী অধিকার কর্মী, পরিবেশবাদী, এবং শান্তি আন্দোলনের সদস্যরা। তারা একটি ন্যায্য, সাম্যবাদী এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ার দাবি তুলে ধরেছেন। এই আন্দোলন কেবল ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে নয়, বরং দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিকেও সামনে নিয়ে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই বিক্ষোভ শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিই নয়, বৈশ্বিক রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে গাজা ও ইউক্রেন নীতির বিরোধিতা এবং ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের দাবি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আগামী দিনগুলোতে ‘৫০৫০১’ আন্দোলন কীভাবে এগিয়ে যায় এবং সরকার এর জবাবে কী পদক্ষেপ নেয়, তা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

সূত্র: বিবিসি

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি