বুধবার, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৫| সকাল ১০:৫৭

কুমিল্লায় সুদের টাকার জন্য নারীকে মারধর, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ১৪, ২০২৫ ৯:৩২ অপরাহ্ণ
কুমিল্লায় সুদের টাকার জন্য নারীকে মারধর, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা

কুমিল্লায় সুদের টাকার জন্য নারীকে মারধর, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় সুদের টাকা ফেরত নিয়ে সালিশের সময় এক নারীকে মারধরের ঘটনায় বিএনপির সাত নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে দেবিদ্বার উপজেলার ভানি ইউনিয়নের সূর্যপুর এলাকায়। রোববার (১৩ এপ্রিল) সকাল থেকে মারধরের দৃশ্য সম্বলিত ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ভুক্তভোগী নারী রোববার দুপুরে দেবিদ্বার থানায় গিয়ে বিএনপির সাত নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ভানি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুল আউয়ালকে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনিই ওই নারীকে মারধর করেছেন। এছাড়া মামলায় আরও ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছেন ভানি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মনির ফরাজি। মনির ফরাজি কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিরও সদস্য এবং তিনি সালিশে উপস্থিত ছিলেন।

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দিন ইলিয়াস মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “ভুক্তভোগী নারী মামলা দায়ের করেছেন। আমরা মামলাটি গ্রহণ করেছি এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারী স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে সুদে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। নির্দিষ্ট সময়ে টাকা ফেরত দিতে না পারায় স্থানীয়ভাবে একটি সালিশের আয়োজন করা হয়। শনিবার সকালে সূর্যপুরে এই সালিশে অভিযুক্ত বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা নারীকে ধারের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দেন। একপর্যায়ে তারা নারীকে তার বাড়ি লিখে দিতে বলেন। এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে নারী প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করা হয়।

মারধরের সময় কেউ একজন এই ঘটনার ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করেন। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে অভিযুক্ত বিএনপি নেতারা আত্মগোপনে চলে গেছেন। তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। অনেকে এই মারধরের ঘটনাকে অমানবিক ও নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন। তারা অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

ওসি শামসুদ্দিন ইলিয়াস আরও বলেন, “আমরা ভিডিও ফুটেজটি পরীক্ষা করছি এবং ঘটনার তদন্ত চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই ঘটনা স্থানীয় রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তারা এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ কামনা করেছেন।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি