গাদ্দাফির মতো পরিণতি হতে পারে খামেনির, হুঁশিয়ারি কট্টরপন্থিদের
ইরানের কট্টরপন্থি অ্যাক্টিভিস্টরা সতর্ক করে বলেছেন, লিবিয়ার প্রয়াত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির মতো পরিণতি হতে পারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় বসার সিদ্ধান্তের পর এই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন তারা। অ্যাক্টিভিস্টদের আশঙ্কা, এই সিদ্ধান্ত খামেনিকে মার্কিন ফাঁদে ফেলতে পারে, যার ফল হতে পারে বিপর্যয়কর।
ইরান ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, খামেনির এই সিদ্ধান্ত দেশটির কট্টরপন্থিদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। তারা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা ইরানের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তারা গাদ্দাফির উদাহরণ টেনে বলছেন, মার্কিন চাপে পড়ে গণবিধ্বংসী অস্ত্র ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লিবিয়ার এই নেতা। এরপর ২০১১ সালে বিদ্রোহীদের হাতে তার সরকারের পতন ঘটে এবং তিনি নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন। এই ঘটনার পর লিবিয়া দীর্ঘ গৃহযুদ্ধে জর্জরিত হয়। কট্টরপন্থিরা আশঙ্কা করছেন, খামেনির ক্ষেত্রেও এমন কিছু ঘটতে পারে।
এই উত্তেজনার পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইরানের গভীর অবিশ্বাস। ২০২০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের প্রভাবশালী সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল কাসেম সোলাইমানি হত্যার শিকার হন। তার মৃত্যু ইরানের জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল, যার শূন্যতা এখনও পূরণ হয়নি। এছাড়া, ফিলিস্তিনে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ভূমিকা নিয়েও কট্টরপন্থিরা ক্ষুব্ধ। তারা মনে করেন, এমন একটি দেশের সঙ্গে আলোচনায় বসা ইরানের স্বার্থের পরিপন্থী।
খামেনি সম্প্রতি ট্রাম্পের চাপ এবং হুমকির মুখে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় রাজি হয়েছেন। এই আলোচনা শনিবার ওমানের রাজধানী মাসকাটে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে, এই সিদ্ধান্ত দেশের ভেতরে খামেনির জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে। কট্টরপন্থিরা বলছেন, এই আলোচনা ইরানের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তারা উদ্বিগ্ন যে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং মার্কিন সিনেটর টম কটনের মতো ব্যক্তিরা ইরানকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র ত্যাগে বাধ্য করতে চাইছেন, যেমনটি গাদ্দাফির ক্ষেত্রে ঘটেছিল।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে ইরানের ওপর চাপ বাড়িয়েছেন। শুরুতে ইরান নানা টালবাহানা করলেও এখন তারা সুর নরম করেছে। তেহরান জানিয়েছে, তারা সরাসরি নয়, তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলবে। তবে, এই পরোক্ষ আলোচনার পেছনের কারণ স্পষ্ট করেনি ইরানি কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অবিশ্বাস থেকেই ইরান এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।