জামায়াত নেতাদের সঙ্গে সিঙ্গাপুর হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক হাইকমিশনার ডেরেক লো জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এই বৈঠক দুই দেশের সম্পর্ক এবং পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ডেরেক লো তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সদস্য মুজিবুল আলম জানান, এই সাক্ষাতে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’ এই বৈঠকের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধি দল জানায়, তারা বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ ও উন্নয়ন অংশীদার। তারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আগ্রহী।
বৈঠকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আরও অর্থবহ ও শক্তিশালী করার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। জামায়াত নেতারা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তারা সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধিদের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং সাম্প্রতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তারা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বিকাশমান এবং এখানে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সাক্ষাতে উভয় পক্ষই দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এবং সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে চায়। বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সিঙ্গাপুরের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইন। তাঁরা সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধিদের বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেন।
জামায়াত নেতারা জানান, তারা বাংলাদেশে সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে কাজ করছে। তারা সিঙ্গাপুরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে আগ্রহী। বৈঠকে শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়টিও আলোচনায় আসে।
এই সাক্ষাত বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটে সিঙ্গাপুরের অংশগ্রহণ এবং এই বৈঠক দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কের সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করেছে। জামায়াত নেতারা আশা প্রকাশ করেন, এই সাক্ষাৎ দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সহযোগিতার নতুন দুয়ার খুলবে।