‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলল ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫’। এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ড. ইউনূস বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমরা বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করছি। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ।” তার কথায় ফুটে ওঠে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি। তিনি বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিনিয়োগে অবদানের জন্য চারটি ক্যাটাগরিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুরস্কৃত করেন ড. ইউনূস। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন—দেশি বিনিয়োগকারী হিসেবে ওয়ালটন, বিদেশি বিনিয়োগকারী হিসেবে বিকাশ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ফেব্রিকস লাগবে। বিশেষ ক্যাটাগরিতে কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের চেয়ারম্যানকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। তিনি নিজে হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন।
চার দিনের এই সামিটে চীন, কোরিয়া, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এসেছেন। প্রথম দুই দিনে তারা বেশ কয়েকটি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছেন। একজন চীনা ব্যবসায়ী বলেন, “বাংলাদেশে সম্ভাবনা আছে। আমরা এখানে বিনিয়োগ করতে চাই।” এছাড়াও কিছু বিদেশি ব্যাংক দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সরকার বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণে নীতিগত শিথিলতা ও নতুন জ্বালানি নীতির পরিকল্পনা করছে। একজন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা বিনিয়োগের পথ সহজ করছি। এটা আমাদের অর্থনীতির জন্য বড় পদক্ষেপ।” ড. ইউনূস ব্যবসা স্থানান্তরের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বিনিয়োগ করা মানে লাভজনক ভবিষ্যৎ। আমরা সব ধরনের সহায়তা দেব।”
এই সামিট বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি মাইলফলক। প্রথম দিন থেকেই উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। একজন বিনিয়োগকারী বলেন, “এখানকার পরিবেশ আমাদের আকৃষ্ট করেছে। আমরা আশাবাদী।” ড. ইউনূসের উপস্থিতি এই আয়োজনে আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। তিনি বলেন, “আমরা একসঙ্গে কাজ করলে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উদাহরণ হবে।”
পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা তাদের আনন্দ প্রকাশ করেন।
সামিটে বিদেশি ব্যাংকগুলোর ঋণের প্রতিশ্রুতি আশার আলো জাগিয়েছে। একজন অর্থনীতিবিদ বলেন, “এই ঋণ আমাদের অবকাঠামো উন্নয়নে সাহায্য করবে।” ড. ইউনূস বলেন, “বিনিয়োগ মানে শুধু টাকা নয়, এটা মানুষের জীবন বদলের গল্প।”
চার দিনের এই আয়োজন বাংলাদেশকে বিশ্ব মঞ্চে নতুনভাবে তুলে ধরছে। সবাই অপেক্ষায় আছে, এই সামিট কীভাবে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেবে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিনিয়োগের নতুন গন্তব্য হিসেবে উঠে আসছে।