এবার ওষুধ আমদানির ওপর শিগগিরই শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের
ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফিরে এসেছেন। আর তার সঙ্গে বিশ্বে আবারও জেগে উঠেছে বাণিজ্যযুদ্ধের ঝড়। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন পণ্যে শুল্ক আরোপ করে বিশ্ব বাণিজ্যকে নাড়িয়ে দিচ্ছেন তিনি। এবার নতুন ঘোষণায় এসেছে ওষুধ আমদানির ওপর শুল্ক। বার্তাসংস্থা রয়টার্স বুধবার (৯ এপ্রিল) এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্প মঙ্গলবার ন্যাশনাল রিপাবলিকান কংগ্রেসনাল কমিটির এক অনুষ্ঠানে বলেন, “শিগগিরই ওষুধ আমদানিতে বড় শুল্ক আসছে।” তিনি দাবি করেন, এই শুল্ক ওষুধ কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন শুরু করতে বাধ্য করবে। এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন ওষুধ আর সেমিকন্ডাক্টরকে শুল্কের বাইরে রেখেছিল। কিন্তু এবার সেই নীতি বদলে যাচ্ছে।
এই ঘোষণা বিশ্বকে অবাক করেছে। ট্রাম্পের শুল্ক নীতির জবাবে চীনসহ অনেক দেশ পাল্টা পদক্ষেপ নিচ্ছে। বুধবার থেকে সব দেশের ওপর নতুন হারে শুল্ক কার্যকর হয়েছে। চীন ট্রাম্পের ৩৪ শতাংশ শুল্কের জবাবে মার্কিন পণ্যে সমান হারে শুল্ক বসিয়েছে। এরপর ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, “চীন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শুল্ক তুলে না নিলে তাদের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক বসবে।”
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট মঙ্গলবার বলেন, “ট্রাম্প চীনের সব পণ্যে বুধবার থেকে ১০৪ শতাংশ শুল্ক চালু করছেন। চীন প্রত্যাঘাত করতে চাইছে। কিন্তু ট্রাম্পের মেরুদণ্ড ইস্পাতের। তিনি পিছু হটবেন না।” তিনি যোগ করেন, “চীন চুক্তি চায়। কিন্তু তারা জানে না কীভাবে এগোতে হয়।”
ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের ধারাবাহিকতা চলছে। ফেব্রুয়ারিতে চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক বসে। মার্চে আরও ১০ শতাংশ যোগ হয়। এরপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আসে। এখন ৫০ শতাংশ যোগ করে মোট ১০৪ শতাংশ শুল্ক চীনের ওপর বসছে। এটা বিশ্ব বাণিজ্যে বিরাট ধাক্কা।
চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, “ট্রাম্প ভুলের পর ভুল করছেন। আমরাও জবাব দেব।” তারা ট্রাম্পের নীতিকে আগ্রাসী বলে সমালোচনা করেছে। একজন চীনা ব্যবসায়ী বলেন, “এটা আমাদের ব্যবসা ধ্বংস করবে। কিন্তু আমরা হারব না।”
ওষুধে শুল্কের ঘোষণা আমেরিকানদের জন্যও চিন্তার কারণ। একজন ফার্মাসিস্ট বলেন, “আমদানি ওষুধের দাম বাড়বে। রোগীদের কষ্ট হবে।” ট্রাম্প অবশ্য বলছেন, “এটা আমেরিকার উৎপাদন বাড়াবে। আমরা নিজেদের ওপর ভরসা করব।”
বিশ্ব বাণিজ্যে এই নতুন শুল্ক ঝড় তুলেছে। চীনের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ছে। একজন বিশ্লেষক বলেন, “এটা শুধু চীন নয়, সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে।” ট্রাম্পের এই নীতি বিশ্ব অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে।
ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধে ওষুধ শিল্প এবার নতুন শিকার। আমেরিকানরা উদ্বিগ্ন। একজন মা বলেন, “আমার সন্তানের ওষুধের দাম বাড়লে কী করব?” চীন বলছে, “আমরা প্রস্তুত। ট্রাম্প যত শুল্ক বাড়াক, আমরা পিছপা হব না।”