প্রতিরক্ষায় সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে বাংলাদেশ-রাশিয়ার আলোচনা
বাংলাদেশ আর রাশিয়ার মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার নতুন দুয়ার খুলতে চলেছে। দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তারা সম্প্রতি মস্কোতে বৈঠকে বসেছেন। এই আলোচনায় দুই দেশের সেনাবাহিনী ও জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি জানানো হয়েছে। এই খবরে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন আশার আলো জ্বলে উঠেছে।
ঢাকার রুশ দূতাবাস মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে এই তথ্য জানায়। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে তারা বলছে, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান মস্কোতে রাশিয়ার উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী কর্নেল জেনারেল আলেকজান্ডার ফোমিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠক ছিল ফলপ্রসূ আর উষ্ণ।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, আলোচনায় প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে কথা হয়েছে। দুই পক্ষই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী। একজন কর্মকর্তা বলেন, “এটা শুধু সামরিক সহযোগিতা নয়, দুই দেশের মানুষের মধ্যে বন্ধন আরও মজবুত করার পথ।”
বৈঠকটি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে হয়েছে। রুশ দূতাবাস বলছে, “দুই নেতা খোলামনে কথা বলেছেন। প্রতিরক্ষা সহযোগিতার নতুন দিগন্ত খোলার ব্যাপারে একমত হয়েছেন।” জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে ইতিহাস আছে। এখন সেটাকে আরও এগিয়ে নেওয়ার সময়।”
আলেকজান্ডার ফোমিনও বাংলাদেশের প্রতি রাশিয়ার শুভেচ্ছার কথা জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই।” বৈঠকে সামরিক প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি বিনিময় আর যৌথ মহড়ার বিষয়ে কথা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এই আলোচনা দুই দেশের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশের একজন সামরিক বিশ্লেষক বলেন, “রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা আমাদের প্রতিরক্ষা শক্তিকে নতুন মাত্রা দেবে।” রাশিয়াও বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখছে।
বৈঠকের পর দুই নেতা হাসিমুখে হাত মেলান। রুশ দূতাবাস বলছে, “এই সাক্ষাৎ উষ্ণতা আর আন্তরিকতায় ভরা ছিল। দুই দেশের মধ্যে ভবিষ্যৎ সম্পর্কের জন্য এটা একটি মাইলফলক।” একজন রুশ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।”
বাংলাদেশ-রাশিয়া সম্পর্কের ইতিহাস দীর্ঘ। সোভিয়েত আমল থেকে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ছিল। এখন সেই সম্পর্ক নতুন রূপ পাচ্ছে। জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, “আমরা একসঙ্গে অনেক কিছু করতে পারি। এটা আমাদের জনগণের জন্যও ভালো।”
এই বৈঠকের ফলাফল কী হবে, সেটা এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আশাবাদী। একজন বাংলাদেশি সেনা সদস্য বলেন, “রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করলে আমাদের শক্তি বাড়বে। এটা আমাদের জন্য গর্বের।”
প্রতিরক্ষা সহযোগিতার এই আলোচনা দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বের নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, “এটা শুধু সামরিক নয়, মানবিক সম্পর্কেরও বিষয়।”