হোয়াটসঅ্যাপে এআই-চালিত সারাংশ ফিচার: গ্রুপ চ্যাটে সময় বাঁচিয়ে কার্যকারিতা বাড়াতে নতুন উদ্ভাবন
ব্যক্তিগত আলাপ, অফিস মিটিং, পারিবারিক আলোচনা কিংবা বন্ধুবান্ধবের আড্ডা—সব ক্ষেত্রেই অন্যতম নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে হোয়াটসঅ্যাপ। নিয়মিত ব্যবহারকারীদের জন্য একাধিক গ্রুপে যুক্ত থাকা এখন সাধারণ বিষয়। তবে ব্যস্ত জীবনে ফোন হাতে নিতে দেরি হলে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জমে ওঠে শত শত মেসেজ, যেগুলো একসঙ্গে পড়ে দেখা সময়সাপেক্ষ এবং বিরক্তিকরও বটে।
এই সমস্যার সহজ ও কার্যকর সমাধান নিয়ে এসেছে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন এআই-চালিত ফিচার। এখন থেকে কোনো গ্রুপ চ্যাটে শত শত মেসেজ জমলেও, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ সরাসরি সেই আলোচনার সারমর্ম বা মূল বিষয়টি জানিয়ে দেবে মাত্র এক ক্লিকে।
নতুন এই ফিচারে, ব্যবহারকারী দীর্ঘ সময় পর চ্যাট খুললে, চ্যাটের উপরে “Summary” নামে একটি অপশন দেখা যাবে। সেখানে গ্রুপ আলোচনার মূল বিষয়—যেমন অফিস মিটিং, বিয়ের আয়োজন, স্কুল রিইউনিয়ন বা ট্রিপের পরিকল্পনা—সংক্ষেপে তুলে ধরা থাকবে। এতে ২০০টি মেসেজ স্ক্রল না করেও সহজেই মূল বিষয়টি জানা সম্ভব হবে।
এই সুবিধা চালাতে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করছে উন্নতমানের এআই অ্যালগরিদম, যা মেসেজ বিশ্লেষণ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সারাংশ তৈরি করে। তবে এতে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা সংরক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ নিশ্চিত করেছে যে, এসব তথ্য কেবলমাত্র ব্যবহারকারীর ফোনেই প্রক্রিয়াজাত হবে এবং কোনোভাবেই অ্যাপের বাইরে পাঠানো হবে না।
গোপনীয়তার দিকটি আরও জোরদার করতে হোয়াটসঅ্যাপ সম্প্রতি ‘অ্যাডভান্সড চ্যাট প্রাইভেসি’ নামের আরেকটি ফিচার চালু করেছে। এটি চালু করলে, ব্যবহারকারীরা গ্রুপ বা ব্যক্তিগত চ্যাট এক্সপোর্ট করতে পারবেন না, অর্থাৎ চ্যাট কপি করে অন্যত্র পাঠানো যাবে না। তবে স্ক্রিনশট নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকছে না। এই সুবিধা ব্যবহার করতে হলে দুই পক্ষেরই হোয়াটসঅ্যাপের সর্বশেষ ভার্সন ইনস্টল থাকা প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সারাংশ ফিচার একাধিক গ্রুপে যুক্ত ব্যস্ত ব্যবহারকারীদের জন্য দারুণ সহায়ক হবে। এতে তারা কোনো গুরুত্বপূর্ণ বার্তা মিস না করে সহজেই মূল তথ্য জানতে পারবেন। অফিসিয়াল গ্রুপে যারা নিয়মিত সক্রিয় থাকতে পারেন না, তাদের জন্যও এটি অত্যন্ত উপযোগী একটি আপডেট।
প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে যেভাবে সহজ এবং কার্যকর করে তুলছে, হোয়াটসঅ্যাপের এই এআই-চালিত সারাংশ ফিচার তারই একটি চমৎকার উদাহরণ। সময় বাঁচিয়ে কাজের গতি বাড়ানো, গোপনীয়তা রক্ষা এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা আরও মসৃণ করাই এই ফিচারের মূল উদ্দেশ্য।