শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| সন্ধ্যা ৭:১১

লেবাননে হামলা: এবার হিজবুল্লাহ কমান্ডারকে হত্যা করল ইসরাইল!

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ৮, ২০২৫ ৭:১১ অপরাহ্ণ
লেবাননে হামলা: এবার হিজবুল্লাহ কমান্ডারকে হত্যা করল ইসরাইল!

লেবাননে হামলা: এবার হিজবুল্লাহ কমান্ডারকে হত্যা করল ইসরাইল!

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর তাইবেহ-তে ইসরাইলি ড্রোন হামলায় হিজবুল্লাহ’র একজন গুরুত্বপূর্ণ কমান্ডার নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম মুহাম্মদ আদনান মনসুর। তিনি হিজবুল্লাহ’র আর্টিলারি কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। আইডিএফ দাবি করেছে, তিনি হিজবুল্লাহ’র সামরিক কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিলেন, এবং এই হামলা তাদের পরিকল্পিত অভিযানের অংশ। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইল এই হামলার ফুটেজও প্রকাশ করেছে, যেখানে একটি ড্রোন থেকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার দৃশ্য দেখা যায়। তবে হিজবুল্লাহ এখনো এই হামলা বা তাদের সদস্যের মৃত্যুর বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু নিশ্চিত করেনি।

এই ঘটনার আগেও লেবাননে ইসরাইলি হামলার খবর পাওয়া গেছে। আল জাজিরা জানায়, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় বিনতে জবেইল জেলার বেইত লিফে একটি গাড়িতে ইসরাইলি ড্রোন হামলা হয়। সেখানে একজন আহত হন। স্থানীয়রা বলছেন, “এই হামলাগুলো আমাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। কখন কোথায় আঘাত হবে, আমরা জানি না।”

এদিকে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৬ এপ্রিল) তুরমুস আয়া শহরে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে মার্কিন নাগরিকত্বপ্রাপ্ত এক ফিলিস্তিনি কিশোর নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানান, এই হামলায় আরও দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। নিহত কিশোরের নাম ওমর মোহাম্মদ রাবেয়া, বয়স মাত্র ১৪ বছর।

তুরমুস আয়ার মেয়র আদিব লাফি রয়টার্সকে বলেন, “শহরের প্রবেশপথে একটি ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারী ওমরকে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় আরও দুই কিশোরকে গুলি করা হয়, তারা গুরুতর আহত।” তিনি আরও বলেন, “ইসরাইলি সেনারা এসে ওমরকে মৃত ঘোষণা করে। এটা আমাদের জন্য একটি কালো দিন।” স্থানীয়রা জানান, ওমর তার বন্ধুদের সঙ্গে ছিল, যখন এই হামলা হয়।

ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা বলছে, “ইসরাইল শহরে অভিযানের নামে নিরীহ মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে। এটা শুধু হত্যা নয়, এটা একটি পরিকল্পিত অপরাধ।” একজন ফিলিস্তিনি বাসিন্দা বলেন, “আমাদের ছেলেরা নিরাপদ নয়। তারা যেকোনো সময় গুলির শিকার হতে পারে।”

লেবানন ও পশ্চিম তীরে এই দুটি ঘটনা ইসরাইল ও হিজবুল্লাহ’র মধ্যে চলমান উত্তেজনাকে আরও জটিল করে তুলেছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলছে, “আমরা আমাদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছি। হিজবুল্লাহ’র মতো গোষ্ঠী আমাদের জন্য হুমকি।” তবে এই হামলায় সাধারণ মানুষের ক্ষতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

তাইবেহ’র একজন বাসিন্দা বলেন, “আমরা শান্তিতে বাঁচতে চাই। কিন্তু এই ড্রোন হামলা আমাদের জীবনকে বিপন্ন করছে।” পশ্চিম তীরে ওমরের মা বলেন, “আমার ছেলে কারও ক্ষতি করেনি। তারা কেন তাকে মারল?”

ইসরাইলের এই হামলাগুলো আন্তর্জাতিক মহলের নজরে এসেছে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, “এটা শুধু লেবানন বা পশ্চিম তীরের ঘটনা নয়। ইসরাইল পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করছে।” হিজবুল্লাহ’র পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া না এলেও, তারা পাল্টা জবাব দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত