বুধবার, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৫| সন্ধ্যা ৭:১৪

ইসরায়েল নৃশংসতার সর্বোচ্চ সীমাও অতিক্রম করেছে: কর্নেল অলি

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ৮, ২০২৫ ৬:৫৬ অপরাহ্ণ
ইসরায়েল নৃশংসতার সর্বোচ্চ সীমাও অতিক্রম করেছে: কর্নেল অলি

ইসরায়েল নৃশংসতার সর্বোচ্চ সীমাও অতিক্রম করেছে: কর্নেল অলি

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ডক্টর কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম (অব.) গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “ইসরায়েলিরা একটি অভিশপ্ত জাতি। তারা নৃশংসতার সর্বোচ্চ সীমাও পার করে গেছে।” সোমবার তার গণমাধ্যম বিষয়ক উপদেষ্টা সালাহ উদ্দীন রাজ্জাকের পাঠানো এক বিবৃতিতে এই কথা বলেন তিনি।

কর্নেল অলি গাজার নিরীহ মানুষের ওপর ইসরায়েলি হামলাকে মানবতার জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, “এই হামলা মানবতাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। কিন্তু বিশ্ব নিশ্চুপ। মুসলিম জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য লজ্জার।” তার কণ্ঠে ফুটে উঠেছে গভীর ক্ষোভ আর হতাশা। তিনি বিশ্বের নীরবতার সমালোচনা করে বলেন, “এই নিষ্ঠুরতা দেখেও কেউ কথা বলছে না। এটা কি আমাদের মানবিকতা?”

তিনি ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার ঐক্যের ওপর জোর দেন। কর্নেল অলি বলেন, “ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় আনতে হবে। ফিলিস্তিনিদের অধিকার লঙ্ঘনের জন্য তাদের বিচারের মুখোমুখি করা জরুরি।” তিনি এটাকে শুধু ফিলিস্তিনের নয়, পুরো মানবজাতির লড়াই বলে মনে করেন।

গাজা থেকে উঠে আসা ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল আনটিল জেনোসাইড স্টপস’ স্লোগানকে তিনি শক্তিশালী বার্তা হিসেবে দেখেন। তিনি বলেন, “এটা কোনো সাধারণ স্লোগান নয়। এটা মানবতার শেষ আহ্বান। ইসরায়েলের রক্তপিপাসু নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।” তিনি এটাকে মুসলমান ও মানুষ হিসেবে সবার দায়িত্ব বলে উল্লেখ করেন। “এখন চুপ থাকার সময় নয়। আমাদের কথা বলতে হবে,” বলেন তিনি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ১৭ মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় ৫০,৫২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১,১৪,৬৩৮ জন। গাজার জনসংযোগ কার্যালয়ের হিসাবে নিহতের সংখ্যা আরও বেশি—৬১,৭০০। এর মধ্যে অনেকে নিখোঁজ। একজন ফিলিস্তিনি বলেন, “আমরা আমাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছি। আমাদের বাড়ি ধ্বংস। এটা কি জীবন?”

কর্নেল অলি এই হামলাকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, “ইসরায়েল শুধু মানুষ মারছে না, তারা একটি জাতিকে ধ্বংস করছে।” তিনি বিশ্ব নেতাদের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করে বলেন, “কত মৃত্যু দেখলে তারা জাগবে? এটা শুধু ফিলিস্তিনের লড়াই নয়, এটা আমাদের সবার।”

তিনি গাজার মানুষের প্রতি সংহতি জানান। “আমরা তাদের পাশে আছি। তাদের কষ্ট আমরা বুঝি,” বলেন তিনি। তিনি মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের আহ্বান জানান। “আমাদের এক হয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। এটা আমাদের বিশ্বাস আর মানবতার পরীক্ষা।”

গাজায় হামলা ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হয়। হামাসের আক্রমণের জবাবে ইসরায়েল অভিযান চালায়। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি হলেও মার্চে তা ভেঙে যায়। এখন পর্যন্ত ধ্বংস আর মৃত্যু ছাড়া কিছুই বাকি নেই। একজন মা বলেন, “আমার সন্তানের জন্য খাবার নেই। আমরা কতদিন বাঁচব?”

কর্নেল অলি এই বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলেন, “ইসরায়েলের এই নৃশংসতা বন্ধ না হলে শান্তি আসবে না।” তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, “ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনুন। ফিলিস্তিনিদের ন্যায়বিচার দিন।”

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি