শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| ভোর ৫:১৩

আইসিসির পরোয়ানাকে পাত্তা না দিয়ে হাঙ্গেরি গেলেন নেতানিয়াহু

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ৩, ২০২৫ ৬:২৫ অপরাহ্ণ
আইসিসির পরোয়ানাকে পাত্তা না দিয়ে হাঙ্গেরি গেলেন নেতানিয়াহু

আইসিসির পরোয়ানাকে পাত্তা না দিয়ে হাঙ্গেরি গেলেন নেতানিয়াহু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে স্পষ্টতই উপেক্ষা করে হাঙ্গেরি সফরে গেছেন। তার সঙ্গে এই সফরে রয়েছেন তার স্ত্রী সারা নেতানিয়াহু। বুধবার সন্ধ্যার পর তেল আবিব বিমানবন্দর থেকে তাদের বহনকারী বিমানটি হাঙ্গেরির উদ্দেশে রওনা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথ। এই চার দিনের সফরে তারা বৃহস্পতিবার ভোরে বুদাপেস্টে পৌঁছাবেন।

এই সফরের পটভূমি বেশ নাটকীয়। গত বছর, ২০২৪ সালের নভেম্বরে, আইসিসি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। অভিযোগ, গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেওয়া এবং হামাসকে নির্মূলের নামে ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ ও শিশুর হত্যার সঙ্গে তিনি জড়িত। এই পরোয়ানা এখনও কার্যকর রয়েছে। আইসিসির ১২৫টি সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে হাঙ্গেরিও একটি, যেহেতু এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য। আইসিসির সনদ অনুযায়ী, কোনো আসামি সদস্যরাষ্ট্রে গেলে তাকে গ্রেপ্তার করা সেই দেশের দায়িত্ব। তবু নেতানিয়াহু এই ঝুঁকি নিয়ে হাঙ্গেরি যাচ্ছেন।

নেতানিয়াহুকে এই সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর আর্বান। আর্বানের সঙ্গে নেতানিয়াহুর সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ। গত নভেম্বরে আইসিসির পরোয়ানা জারির পর আর্বান এটিকে ‘নিষ্ঠুর পদক্ষেপ’ বলে সমালোচনা করেছিলেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, নেতানিয়াহু হাঙ্গেরিতে এলে এই পরোয়ানার কোনো প্রভাব পড়বে না। এই প্রতিশ্রুতির ভরসাতেই নেতানিয়াহু এই সফরে গেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে এই সফর নিয়ে বিতর্ক কম নয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে আর্বানের তীব্র সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে, “নেতানিয়াহু বুদাপেস্টে পা রাখা মাত্রই তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত। আইসিসির পরোয়ানাকে সম্মান জানানো হাঙ্গেরির দায়িত্ব।” কিন্তু আর্বানের অবস্থান থেকে স্পষ্ট, তিনি এই আহ্বানে কান দেবেন না।

এদিকে, নেতানিয়াহুর এই সফরে কী নিয়ে আলোচনা হবে, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। হাঙ্গেরি ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হতে পারে। তবে আইসিসির পরোয়ানা ঝুলে থাকায় এই সফর আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেকে বলছেন, এটি আইসিসির কর্তৃত্বের প্রতি এক ধরনের চ্যালেঞ্জ। আবার কেউ কেউ মনে করেন, আর্বানের সমর্থন নেতানিয়াহুকে সাহস জোগাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপ ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। গাজা যুদ্ধ নিয়ে দেশের ভেতরে ও বাইরে তিনি সমালোচনার মুখে রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে হাঙ্গেরি সফর তার অবস্থান শক্ত করার একটি কৌশল হতে পারে। তবে আইসিসির পরোয়ানা এড়িয়ে তিনি কতদিন এভাবে চলতে পারবেন, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত