ট্রাম্পের হুমকির জবাবে যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা হুমকি ইরানের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে পরমাণু চুক্তি না করলে বোমা হামলার হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই আক্রমণ এতটাই তীব্র হবে যে এর আগে এমন কিছু দেখা যায়নি। এই হুমকির জবাবে ইরানও পাল্টা হুমকি দিয়েছে। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি স্পষ্ট করে বলেছেন, “যে কোনো বহিরাগত আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেওয়া হবে।” সোমবার ৩১ মার্চ এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
ট্রাম্পের হুমকি এসেছে গত রোববার। তিনি বলেন, “ইরান যদি পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আমাদের সঙ্গে চুক্তিতে না আসে, তাহলে আমরা বোমা ফেলব। এছাড়া শুল্ক বাড়িয়ে তাদের অর্থনীতি ধ্বংস করব।” এই বক্তব্যের পরই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি তেহরানে ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাতে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি না যে কেউ আমাদের ওপর হামলা করবে। কিন্তু যদি কেউ আগ্রাসন দেখায়, তাহলে তারা কঠোর প্রতিশোধের মুখে পড়বে।” তিনি আরও বলেন, “যদি তারা দেশের ভেতরে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করে, তাহলে ইরানের জনগণ নিজেরাই তাদের জবাব দেবে।”
ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক বছরের পর বছর ধরে টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে। ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে ট্রাম্প একতরফাভাবে বেরিয়ে যান। তারপর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। ইরান বলছে, তারা পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে না, বরং শান্তিপূর্ণ শক্তি উৎপাদনই তাদের লক্ষ্য। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এই দাবি মানতে নারাজ। ট্রাম্প বারবার বলেছেন, “ইরানকে পরমাণু শক্তি হতে দেওয়া যাবে না।”
ইরান সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে পরোক্ষ কূটনীতির পথ খোলা রেখেছে। গত সপ্তাহে ওমানের মাধ্যমে ট্রাম্পের একটি চিঠির জবাবে ইরান বলেছে, “হুমকির মুখে আমরা সরাসরি কথা বলব না।” ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বৃহস্পতিবার বলেন, “আমরা কূটনৈতিক সমাধান চাই, কিন্তু চাপে বসব না।” রোববার এক টিভি সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, “আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত, তবে অতীতের বিশ্বাসভঙ্গ আমাদের সতর্ক করেছে। আয়াতুল্লাহ খামেনিও পরোক্ষ পথে কথা বলার পক্ষে।”
খামেনি তার ভাষণে আরও বলেন, “এই রমজান মুসলিমদের জন্য তিক্ত ছিল। গাজা আর লেবাননে যা ঘটছে, তাতে আমেরিকার হাত রয়েছে।” তিনি ইসরায়েলকে ‘পশ্চিমা শক্তির প্রক্সি’ বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, “এই অপরাধী গোষ্ঠীকে ফিলিস্তিন থেকে উৎখাত করতে হবে।” তার এই বক্তব্য ইরানের আঞ্চলিক অবস্থানকেও তুলে ধরে।