ট্রাম্পের চিঠির জবাব দিল ইরান
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি চিঠির জবাবে ইরান সম্প্রতি সাড়া দিয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গত ২৭ মার্চ ২০২৫-এ ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ট্রাম্পের পাঠানো চিঠির প্রতিক্রিয়া হিসেবে একটি জবাব প্রস্তুত করেছে। চিঠিটি উমানের মাধ্যমে তেহরানে পৌঁছেছিল, যেখানে ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়েদ আব্বাস আরাকচি বলেন, “এই চিঠি ট্রাম্পের প্রকাশ্য বক্তব্যেরই প্রতিফলন। আমরা এটি পড়েছি, মূল্যায়ন করেছি, এবং উপযুক্ত সময়ে জবাব পাঠিয়েছি।” এই ঘটনা বিশ্বের কাছে ইরানের অবস্থান পরিষ্কার করেছে।
ট্রাম্পের চিঠিটি গত বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের কূটনীতিক আনোয়ার গারগাশের হাত ধরে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে পৌঁছায়। চিঠিতে ট্রাম্প ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানান এবং সম্পর্ক উন্নয়নের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে ইরানের জবাবে চারটি মূল বিষয় উঠে এসেছে। প্রথমত, তারা পরমাণু চুক্তি নিয়ে কথা বলতে রাজি, তবে শর্ত হলো যুক্তরাষ্ট্রকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলতে হবে। দ্বিতীয়ত, মিসাইল প্রকল্প নিয়ে কোনো আলোচনা হবে না। তৃতীয়ত, হিজবুল্লাহ বা হামাসের মতো গোষ্ঠীগুলো তাদের সমর্থিত হলেও, এটি আলোচনার বিষয় নয়। চতুর্থত, ইরান যুদ্ধ চায় না, তবে আক্রমণ হলে প্রতিরোধ করবে।
ইরানের এই জবাব উমানের মাধ্যমে ওয়াশিংটনে পৌঁছেছে। তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে আরাকচি বলেন, “আমরা আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছি। ট্রাম্প যদি সত্যিই শান্তি চান, তাহলে তাকে কাজে দেখাতে হবে।” এই চিঠি ও জবাবের ঘটনা ইরানের সঙ্গে আমেরিকার দীর্ঘদিনের শত্রুতার মধ্যে একটি নতুন মোড় এনেছে। ২০১৮ সালে ট্রাম্প পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। এরপর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়েছে। এখন ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাবে অনেকে আশা দেখছেন, আবার অনেকে এটাকে কৌশল মনে করছেন।