ক্রসফায়ারে নিহত যুবদল নেতার পরিবারকে ঈদ উপহার দিলেন তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্রসফায়ারে নিহত যুবদল নেতা গোলাম রব্বানীর পরিবারকে ঈদ উপহার প্রদান করেছেন। ২০২৫ সালের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এই উপহার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, যা রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। গোলাম রব্বানী, যিনি স্থানীয় যুবদলের একজন সক্রিয় নেতা ছিলেন, ২০১৬ সালে র্যাবের হাতে কথিত ক্রসফায়ারে নিহত হন। তার মৃত্যুর পর থেকে পরিবারটি অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছিল। তারেক রহমানের এই উদ্যোগকে অনেকে মানবিক সহায়তা হিসেবে দেখছেন।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, গত ২৬ মার্চ ২০২৫, বুধবার সকালে জেলা যুবদলের নেতারা গোলাম রব্বানীর বাড়িতে গিয়ে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার হস্তান্তর করেন। উপহারের মধ্যে ছিল নগদ অর্থ, নতুন পোশাক, খাদ্যসামগ্রী এবং ঈদের অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবদলের সভাপতি এ এইচ এম সাইফুল্লাহ রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তফা প্রধান হক বাচ্চুসহ অন্যান্য নেতারা। গোলাম রব্বানীর বড় মেয়ে রওনক জাহান রিক্তা এবং স্ত্রী শাহনাজ বেগমের হাতে এই উপহার তুলে দেওয়া হয়।
রওনক জাহান আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “আমরা বাবাকে হারানোর পর থেকে অনেক কষ্টে আছি। তারেক রহমান আমাদের কথা মনে রেখেছেন, এটা আমাদের জন্য বড় সান্ত্বনা। আমি তার জন্য দোয়া করি।” শাহনাজ বেগমও তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “এই উপহার আমাদের ঈদের আনন্দ অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।” তিনি অভিযোগ করেন, স্বামীকে হত্যার পর দলের কিছু নেতা ছাড়া কেউ তাদের খোঁজ নেয়নি।
বিএনপি নেতারা জানান, তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে দলের নিহত ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে আসছেন। এই উপহার প্রদান তারই একটি অংশ। জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আনিসুর রহমান কোকো বলেন, “তারেক ভাই সবসময় আমাদের নির্যাতিত পরিবারগুলোর কথা মনে রাখেন। তিনি লন্ডন থেকে নিয়মিত খোঁজখবর নেন এবং সহায়তা পাঠান।” এই উদ্যোগকে দলের মধ্যে ঐক্য ও মনোবল বৃদ্ধির একটি পদক্ষেপ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
এদিকে, গোলাম রব্বানীর মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক এখনো অমীমাংসিত। তার পরিবার ও বিএনপি দাবি করে, তাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর পরিকল্পিতভাবে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। শাহনাজ বেগম অভিযোগ করেন, “র্যাব তাকে তিন দিন আটকে রেখে মাঠে নিয়ে গুলি করে। এর পেছনে শাসক দলের কিছু নেতার হাত ছিল।” তবে তৎকালীন সরকার এটিকে ‘বন্দুকযুদ্ধে নিহত’ হিসেবে উল্লেখ করেছিল।
এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ফেলেছে। বিএনপি সমর্থকরা তারেক রহমানের এই মানবিক পদক্ষেপের প্রশংসা করছেন। তবে কেউ কেউ মনে করেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হতে পারে। যাই হোক, এই উপহার গোলাম রব্বানীর পরিবারের জন্য ঈদে একটু স্বস্তি এনেছে। তারেক রহমানের এই উদ্যোগ আগামী দিনে দলের অন্যান্য নিহত নেতাকর্মীদের পরিবারের জন্যও অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করতে পারে।