শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| সন্ধ্যা ৭:২০

ইসরায়েলের মূল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলার দাবি হুথিদের

প্রতিবেদক
staffreporter
মার্চ ২৬, ২০২৫ ৫:৩৫ অপরাহ্ণ
ইসরায়েলের মূল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলার দাবি হুথিদের

ইসরায়েলের মূল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলার দাবি হুথিদের

ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বেন গুরিয়নের ওপর হামলা চালানোর দাবি করেছে। ২৪ মার্চ, ২০২৫ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, হুথি গোষ্ঠীর সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তারা ইসরায়েলের তেল আবিবের কাছে অবস্থিত এই বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এই হামলার লক্ষ্য ছিল বিমানবন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত করা এবং গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানানো। হুথিদের এই দাবি মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

হুথি মুখপাত্র সারিয়া দাবি করেছেন, “আমরা একটি উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন ব্যবহার করে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে সফলভাবে হামলা চালিয়েছি। এটি ফিলিস্তিনের সমর্থনে আমাদের প্রতিশ্রুতির অংশ।” তিনি আরও বলেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের হামলা অব্যাহত থাকবে। হুথিরা এর আগেও লোহিত সাগরে ইসরায়েলি জাহাজ এবং গাজার সমর্থনে অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। তবে, এই হামলার দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এই দাবির প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, তারা হুথিদের হামলার চেষ্টা সম্পর্কে অবগত এবং তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় ছিল। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা একটি শত্রু ড্রোন শনাক্ত করেছে, যা বেন গুরিয়নের কাছাকাছি পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করা হয়েছে। বিমানবন্দরে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।” ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, হামলার চেষ্টার সময় বিমানবন্দরে উড্ডয়ন ও অবতরণ সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল, তবে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়েছে।

হুথিদের এই হামলার দাবি এমন সময়ে এসেছে, যখন গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই সংঘাতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। হুথিরা গাজার সমর্থনে ইসরায়েলি স্থাপনা ও জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা জোরদার করেছে। তারা দাবি করেছে, বেন গুরিয়ন হামলায় ব্যবহৃত ড্রোনটি ইয়েমেন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, যা প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, হুথিদের এই হামলার দাবি ইরানের সমর্থনে পরিচালিত হতে পারে। ইরান দীর্ঘদিন ধরে হুথিদের অস্ত্র ও প্রযুক্তি সরবরাহ করে আসছে। হুথিদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ইসরায়েল ও তার মিত্রদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তবে, এই হামলার দাবি কতটা সত্য, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস-এর মতো সংস্থা বলছে, হুথিরা প্রচারণার জন্য এ ধরনের দাবি করতে পারে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং হুথিদের হামলার চেষ্টাকে নিন্দা করে। জাতিসংঘও মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছে। এদিকে, হুথিরা হুমকি দিয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত যেকোনো বিমান সংস্থা তাদের লক্ষ্যবস্তু হবে।

এই ঘটনা গাজার সংঘাতকে আঞ্চলিক সংকটে রূপ দিচ্ছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত হুথিদের হামলা ঠেকাতে সক্ষম হলেও, এটি মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ শান্তি প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলেছে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি