বাংলাদেশে এখনো ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যায়নি : প্রধান উপদেষ্টা
স্বাধীন বাংলাদেশে এখনো ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে সব বীর শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিল একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা, যেখানে আইনের শাসন থাকবে, মানুষের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত হবে এবং বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে উঠবে। কিন্তু স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেই লক্ষ্য আজও পূরণ হয়নি। তিনি বলেন, “দেশের মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। দুর্নীতি, লুটপাট এবং গুম-খুনের রাজত্বের মাধ্যমে দেশে একটি ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছে।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। তাদের আত্মত্যাগ আমাদের ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। এই সুযোগ আমরা কোনোক্রমেই বৃথা যেতে দেব না।”
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে জীবদ্দশায় গুণী ব্যক্তিদের সম্মানিত করার গুরুত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, “মরণোত্তর পুরস্কারের চেয়ে জীবদ্দশায় স্বীকৃতি পেলে তা ব্যক্তি, পরিবার এবং জাতির জন্য অনেক বেশি আনন্দের হয়। যাদের মরণোত্তর পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে, তারা আজ আমাদের মাঝে নেই। ভবিষ্যতে যেন আমরা জীবিত গুণীজনদের যথাসময়ে স্বীকৃতি দিতে পারি, সে বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে।”
ড. ইউনূস বলেন, “যাদেরকে আমরা আজ সম্মানিত করছি, তাদের কাজ এবং অবদান জাতিকে গৌরবান্বিত করেছে। জাতি হিসেবে আমরা তাদের মাধ্যমে সম্মানিত হচ্ছি। তারা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। জীবিত অবস্থায় তাদের যথাযথ সম্মান জানাতে না পারলে আমরা অকৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে চিহ্নিত হবো।”
তিনি জাতীয় সম্মাননা প্রদানের ক্ষেত্রে আরও সময়োপযোগী ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যারা আজকের অনুষ্ঠানে সম্মানিত হলেন, তাদের আত্মত্যাগ ও অবদান আমাদের চিরস্মরণীয় থাকবে।”