বগুড়ায় বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে ১৩ চোরাই গরু উদ্ধার
বগুড়ার কাহালু উপজেলায় একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনায় বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে ১৩টি চোরাই গরু উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনা ঘটেছে শনিবার (২২ মার্চ, ২০২৫) রাতে কালাই ইউনিয়নে। অভিযানে জড়িত ছিল নওগাঁর আত্রাই থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং কাহালু থানা পুলিশ। উদ্ধারকৃত গরুগুলো নওগাঁর আত্রাই থেকে চুরি হওয়া বলে শনাক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় আন্তঃজেলা গরু চোর চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হলেও বিএনপি নেতা পলাতক রয়েছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, গত ১৪ মার্চ নওগাঁর আত্রাই উপজেলার নৈদিঘী গ্রামের মোরশেদ আলী শেখের গোয়ালঘর থেকে ৮টি গরু চুরি হয়। এরপর জেলা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত শুরু করে। তদন্তে আন্তঃজেলা গরু চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য ছোটন প্রামাণিককে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ি আত্রাই উপজেলার মনিয়ারী ইউনিয়নের দীঘিরপাড় গ্রামে। ছোটনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ বগুড়ার কাহালু উপজেলার কালাই ইউনিয়নে অভিযান চালায়। সেখানে কালাই ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর শাহ’র (৪০) গোয়ালঘর থেকে ১৩টি চোরাই গরু উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ৫টি গরু আত্রাই থেকে চুরি হওয়া বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
রোববার (২৩ মার্চ) দুপুরে নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সাফিউল সারোয়ার এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “এটি একটি আন্তঃজেলা চোর চক্রের কার্যক্রম। গ্রেপ্তারকৃত ছোটন স্বীকারোক্তি দিয়েছে এবং তার নামে আগেও চুরির মামলা রয়েছে। আমরা এই চক্রের অন্য সদস্যদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছি।” তবে, আব্দুল গফুর শাহ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। কাহালু থানার ওসি আব্দুল হান্নান জানান, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। গফুরের বাড়ি থেকে গরুগুলো উদ্ধার করা হলেও তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।”
এ ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে এটিকে রাজনৈতিক দলের নেতার অপরাধে জড়ানোর উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “যে দেশে মানুষ নিরাপদ নয়, সেখানে গরুও নিরাপদ নয়।” আরেকজন লিখেছেন, “বিএনপি নেতার বাড়িতে চোরাই গরু মিললো, এটাই তাদের চরিত্র।” তবে, স্থানীয় বিএনপি নেতারা এই ঘটনাকে ব্যক্তিগত বিষয় বলে দলের সঙ্গে জড়াতে আপত্তি জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, আব্দুল গফুর শাহ কালাই ইউনিয়নের পিলকুঞ্জ ফকিরপাড়ার বাসিন্দা এবং দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তার বাড়ি থেকে গরু উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় হতাশা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। একজন বাসিন্দা বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম তিনি আমাদের নেতৃত্ব দেবেন, কিন্তু এখন দেখছি তিনি চুরির সঙ্গে জড়িত।”
পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধারকৃত গরুগুলো মালিকের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
