হিজাববিহীন নারীদের ধরতে ইরানে ড্রোন ব্যবহার
ইরানে নারীদের জন্য জনসমাগমে হিজাব পরিধান বাধ্যতামূলক। এই আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সম্প্রতি, হিজাব আইন কার্যকর করতে ইরান সরকার ড্রোন, ফেসিয়াল রিকগনিশন সিস্টেম এবং ‘নাজার’ নামক একটি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার শুরু করেছে।
রাজধানী তেহরান ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ড্রোনের মাধ্যমে হিজাববিহীন নারীদের শনাক্ত করা হচ্ছে। এছাড়া, প্রধান সড়কগুলোতে নিরাপত্তা ক্যামেরা স্থাপন করে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তির মাধ্যমে হিজাব আইন লঙ্ঘনকারীদের শনাক্ত করা হচ্ছে।
‘নাজার’ নামক মোবাইল অ্যাপটি ইরানের পুলিশ পরিচালনা করে। এই অ্যাপের মাধ্যমে অনুমোদিত ব্যক্তিরা হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ জানাতে পারেন। ব্যক্তিরা যানবাহনের ভেতরে হিজাববিহীন নারীদের অবস্থান, তারিখ, সময় এবং যানবাহনের নম্বর প্লেটসহ রিপোর্ট করতে পারেন। এই রিপোর্ট সরাসরি পুলিশকে সতর্কবার্তা পাঠায়, যা দেখে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
হিজাব আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার, মারধর এবং কখনো কখনো পুলিশি হেফাজতে যৌন সহিংসতার অভিযোগও উঠেছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সতর্কতার সঙ্গে এসব কৌশল প্রয়োগ করছে।
ইরানের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই ধরনের নজরদারিকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও স্বাধীনতার লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করছে। তারা মনে করেন, এই পদক্ষেপ নারীদের অধিকার হরণের শামিল। অন্যদিকে, ইরান সরকার তাদের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষার জন্য এই পদক্ষেপকে যৌক্তিক বলে দাবি করছে।
ইরানে হিজাব আইন কার্যকর করতে ড্রোন, ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি ও মোবাইল অ্যাপের ব্যবহার দেশটির সামাজিক নিয়ম ও প্রযুক্তির সংমিশ্রণের একটি উদাহরণ। তবে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও স্বাধীনতার প্রশ্নও উঠছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।