শুক্রবার, ৬ই জুন, ২০২৫| রাত ১০:২৯

আল-আকসা মসজিদ ভাঙার ষড়যন্ত্র, ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রীর পশ্চীম তীর সফরে বাধা ইসরায়েলের

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ২০, ২০২৫ ৬:৫১ অপরাহ্ণ
আল-আকসা মসজিদ ভাঙার ষড়যন্ত্র, ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রীর পশ্চীম তীর সফরে বাধা ইসরায়েলের

আল-আকসা মসজিদ ভাঙার ষড়যন্ত্র, ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রীর পশ্চীম তীর সফরে বাধা ইসরায়েলের

মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদ ভেঙে সেখানে ইহুদি মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে ইসরায়েলি অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের উস্কানিমূলক আলোচনা ফিলিস্তিনে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। এরই মধ্যে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফাকে পশ্চিম তীরের কয়েকটি শহর ও গ্রাম সফরের অনুমতি না দিয়ে ইসরায়েল আরেকটি উদ্ধত পদক্ষেপ নিয়েছে। এই দুটি ঘটনা ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ক্ষোভ আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, যারা ইসরায়েলের এই ক্রমাগত উস্কানিকে শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র ও প্রবাসী মন্ত্রণালয় শনিবার (১৯ এপ্রিল) সতর্কতা জারি করে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বসতিস্থাপনকারীরা হিব্রু ভাষার প্ল্যাটফর্মে আল-আকসা মসজিদ ভেঙে ‘থার্ড টেম্পল’ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছে। এই পরিকল্পনাকে ফিলিস্তিনি মন্ত্রণালয় জেরুজালেমে ইসলামি ও খ্রিস্টান পবিত্র স্থানগুলোতে ‘পদ্ধতিগত উস্কানি’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তারা এক্সে এক পোস্টে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই বিষয়ে গুরুত্বের সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আল-আকসা প্রাঙ্গনে জেরুজালেম স্ট্যাটাস কু অনুযায়ী অমুসলিমদের প্রার্থনা নিষিদ্ধ, কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরায়েলি বসতিস্থাপনকারীরা ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় সেখানে প্রবেশ করে প্রার্থনা করছে, যা উত্তেজনার অন্যতম কারণ।
এই ঘটনার পরপরই ইসরায়েল ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফার পশ্চিম তীরের বুরকা, দেইর দিবওয়ান, দোমা ও কুসরা গ্রাম এবং শহর সফরের অনুমতি প্রত্যাখ্যান করেছে। এই এলাকাগুলো গত কয়েক মাস ধরে অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের সহিংস হামলা ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর উপস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। ফিলিস্তিনের বসতি ও দেয়াল প্রতিরোধ কমিশনের প্রধান মুআয়্যাদ শাবান এই সিদ্ধান্তকে ‘বিপজ্জনক নজির’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি জানান, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও ইসরায়েলের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের চলাচলের জন্য ইসরায়েলের সমন্বয় প্রয়োজন, কিন্তু এবার ইসরায়েল তা প্রত্যাখ্যান করেছে। শাবানের মতে, বসতিস্থাপনকারীদের উস্কানিমূলক প্রচারণা ও চাপের কাছে ইসরায়েল সরকার নতি স্বীকার করেছে।
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ দীর্ঘদিনের উত্তেজনার কারণ। ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ এখানে প্রায় ৭,৭০,০০০ অবৈধ বসতিস্থাপনকারী বাস করছে, যারা ১৮০টি বৈধ ঘোষিত বসতি এবং ২৫৬টি অননুমোদিত আউটপোস্টে রয়েছে। এর মধ্যে ১৩৮টি কৃষি ও পশুপালন নির্ভর। এই বসতিস্থাপনকারীরা ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তিগত ভূমি দখল করে এবং ইসরায়েলি সরকারের সুরক্ষা পায়। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরে সহিংসতা বেড়েছে। ফিলিস্তিনি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৮ মাসে এখানে ৯৫২ জন নিহত এবং ৭,০০০-এর বেশি আহত হয়েছেন।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে এবং সব বসতি প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়। কিন্তু ইসরায়েল এই রায় উপেক্ষা করে বসতি সম্প্রসারণ অব্যাহত রেখেছে। আল-আকসা মসজিদ নিয়ে ষড়যন্ত্র এবং ফিলিস্তিনি নেতাদের চলাচলে বাধা সৃষ্টি ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার লঙ্ঘনের ধারাবাহিকতার অংশ। এই পদক্ষেপগুলো শুধু ফিলিস্তিনিদের জীবনকে আরও বিপন্ন করছে না, বরং আঞ্চলিক শান্তি প্রক্রিয়াকেও ধ্বংস করছে। ফিলিস্তিনি মন্ত্রণালয়ের আহ্বান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া এখন এই উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ইসরায়েলের এই উস্কানিগুলো অব্যাহত থাকলে ফিলিস্তিনে সহিংসতা আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা কেবল দুই পক্ষের মধ্যে বিভেদই বাড়াবে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত
আজকের নামাজের সময়সূচি (৬ জুন, ২০২৫)

আজকের নামাজের সময়সূচি (২ মে, ২০২৫)

ওষুধের শুল্ক কমানোর সুপারিশ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী নূরজাহান বেগমের বক্তব্য

ওষুধের শুল্ক কমানোর সুপারিশ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী নূরজাহান বেগমের বক্তব্য

তিন দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন জেলেনস্কি, বললেন ৩০ দিনের কমে আলোচনা নয়

তিন দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন জেলেনস্কি, বললেন ৩০ দিনের কমে আলোচনা নয়

ভাতা ছাড়াই দায়িত্ব পালন করেছেন সংস্কার কমিশনের ১১ সদস্য

ভাতা ছাড়াই দায়িত্ব পালন করেছেন সংস্কার কমিশনের ১১ সদস্য

অপরিকল্পিত নগরায়ণে কৃষিজমি হুমকিতে, স্থানিক পরিকল্পনার ওপর গুরুত্বারোপ উপদেষ্টাদের

অপরিকল্পিত নগরায়ণে কৃষিজমি হুমকিতে, স্থানিক পরিকল্পনার ওপর গুরুত্বারোপ উপদেষ্টাদের

ইতিহাসের এই দিনে (৬ জুন, ২০২৫)

ইতিহাসের এই দিনে (৩০ জানুয়ারি, ২০২৫)

আজকের আবহাওয়া (৬ জুন, ২০২৫)

আজকের আবহাওয়া (২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫)

অর্থনীতির সংকট কাটিয়ে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট: বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ গত বছরের জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার এক বছর পূর্ণ করতে চললেও দেশের অর্থনীতি এখনও স্থবিরতার মধ্যেই রয়েছে। মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগে স্থবিরতা, কর্মসংস্থান সংকট, রফতানি হ্রাস ও রাজস্ব ঘাটতির মতো বহু সমস্যা সামনে রেখে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। বাজেট প্রস্তুতের আগে অর্থ মন্ত্রণালয় যে আটটি প্রধান চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে, তার মধ্যে রয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা, সামাজিক নিরাপত্তা বাড়ানো, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন এবং এলডিসি উত্তরণে প্রস্তুতি। অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। একইসঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে উপকারভোগীর সংখ্যা ও ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনাও থাকছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছে, তা সামাল দিতে কেবল সামাজিক সুরক্ষা বাড়ানোই যথেষ্ট নয়। নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ না থাকায় দেশের শিল্প খাতেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানিতে এলসি খোলার হার ৩০ শতাংশ কমেছে। শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ নেমে এসেছে ৪৮.৪১ শতাংশে এবং দেশে বর্তমানে বেকার সংখ্যা ২৭ লাখ ৩০ হাজার, যা এক বছরে বেড়েছে সোয়া তিন লাখ। বিদেশে কর্মী পাঠানোর হারও ২২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে আশার কথা হলো—রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে এবং মার্চ ও এপ্রিল মাসে তা রেকর্ড পরিমাণে পৌঁছেছে। এদিকে বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্য ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এনবিআর মাত্র ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে পেরেছে, ফলে প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সরকার নতুন খাতে কর আরোপ এবং কর ব্যবস্থার অটোমেশন চালুর মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর চেষ্টা করছে। সরকারি ঋণের পরিমাণ এরইমধ্যে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। নতুন বাজেট বাস্তবায়নে আরও ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যার মধ্যে সুদ পরিশোধেই ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। তবে ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা কিছুটা কমিয়ে বাজেট ঘাটতি সীমিত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, উচ্চাভিলাষী এই বাজেট বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা। বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেনের মতে, বাজেটের আকার আরও ছোট ও বাস্তবসম্মত হলে তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হতো। সিপিডির মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, বাজেটের মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা এবং বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বৈদেশিক বাণিজ্যেও নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক, ভারতের পণ্যে নিষেধাজ্ঞা এবং বৈশ্বিক বাজারের অস্থিরতায় রফতানি কমেছে। আখাউড়া স্থলবন্দরের মতো সীমান্ত বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পথগুলোর কার্যকারিতা কমে গেছে। এছাড়া, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং চাঁদাবাজি ও সাইবার হুমকির কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমন অবস্থায় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বিনিয়োগ সুরক্ষায় ‘ফাস্ট-ট্র্যাক অভিযোগ নিষ্পত্তি’ এবং ‘ই-কমার্স নিরাপত্তা ইউনিট’ গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। এই সব বাস্তবতায় সরকারের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ তৈরি ও তার কার্যকর বাস্তবায়ন, যার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে গতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

পরিবর্তিত সময়সূচিতে ৪৬তম বিসিএস লিখিত ও ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে

দুর্নীতির মাধ্যমে গড়া সম্পদ উদ্ধার ছাড়া বিপ্লব অসম্পূর্ণ: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

হোয়াইট হাউজে ঢুকেই নতুন যুদ্ধের ঘোষণা দেবেন ট্রাম্প।