অপরিকল্পিত নগরায়ণে কৃষিজমি হুমকিতে, স্থানিক পরিকল্পনার ওপর গুরুত্বারোপ উপদেষ্টাদের
সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো বর্তমানে নিজেদের মতো করে বিক্ষিপ্তভাবে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করায় কৃষিজমি ও পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। তিনি বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও শিল্পায়নের কারণে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কৃষিজমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় জাতীয় স্থানিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে কৃষি জমি ও পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।
শনিবার (১০ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) তিন দিনব্যাপী নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনাবিষয়ক চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘নগর, অঞ্চল এবং গ্রামীণ এলাকার বৈষম্যহীন উন্নয়নে স্থানিক পরিকল্পনা’।
আদিলুর রহমান খান বলেন, বাংলাদেশে প্রতি হেক্টরে ১১ দশমিক ৮ জন মানুষ বসবাস করে, যা চীন, জাপান, থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার তুলনায় বহুগুণ বেশি। এই জনঘনত্বের দেশে ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে স্থানিক পরিকল্পনা অপরিহার্য। কৃষিজমি সুরক্ষায় একটি আইন প্রণয়নের কাজও চলছে বলে জানান তিনি।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষায় আইন-নীতিমালার পাশাপাশি প্রয়োজন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের পরিবর্তন। পরিবেশবান্ধব না হলে কোনো মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমই টেকসই হতে পারে না। পাহাড় দখলের ক্ষেত্রে প্রকৃত দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে কেবল শ্রমিকদের দায়ী করাও যথার্থ নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সম্মেলনে জাতিসংঘ মানব বসতি কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক আনাক্লাউদিয়া রসবাখ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম, বিআইপির উপদেষ্টা পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন এবং বিআইপির সভাপতি ড. আদিল মুহাম্মদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এবারের সম্মেলনে অন্তত ৬০টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করছেন দেশি-বিদেশি পরিকল্পনাবিদ ও পেশাজীবীরা। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, ইরান, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে ও সুইডেনসহ অন্তত ১৫টি দেশের ৩৫ জন প্রতিনিধি এতে অংশ নিয়েছেন। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য হলো পরিকল্পনাবিদ, গবেষক ও নীতিনির্ধারকদের মধ্যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের জন্য কার্যকর সুপারিশ প্রণয়ন করা।