ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন, জাল পাসপোর্ট বানাচ্ছেন বাংলাদেশিরা
সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, কিছু বাংলাদেশি নাগরিক জাল নথিপত্রের মাধ্যমে ভারতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট সংগ্রহ করছেন। এই ধরনের কার্যকলাপ দেশের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য হুমকি স্বরূপ।
একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে, মুর্শিদাবাদের রানিনগর থানার সীতানগর এলাকায় মেহের শেখ নামের এক ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন প্রায় সাত বছর আগে। তিনি জাল নথিপত্র ব্যবহার করে সেখানে বসবাস শুরু করেন এবং স্থানীয় এক যুবতীকে বিয়ে করেন। অভিযোগ রয়েছে যে, মেহের তার শ্বশুরকে নিজের বাবা হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন। পরে তিনি এই ভুয়া পরিচয়ের ভিত্তিতে ভারতীয় পাসপোর্টও সংগ্রহ করেন।
২০২৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কলকাতার ভবানীপুর থানায় একটি ভুয়া পাসপোর্ট সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয় যে, জাল নথিপত্রের মাধ্যমে পাসপোর্ট তৈরি করার একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে লালবাজার পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং কলকাতা ও শহরতলির বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার করে।
মেহের শেখকে গ্রেফতারের পর পুলিশ জানতে পারে যে, তিনি তার শ্বশুরকে বাবা হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন এবং সেই ভিত্তিতে পাসপোর্ট পেয়েছেন। এই ঘটনার তদন্তে পুলিশ আরও জানতে পারে যে, জাল পাসপোর্ট ও নকল ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরির একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। এই চক্রের সদস্যরা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের জাল নথিপত্র সরবরাহ করে তাদের ভারতীয় নাগরিকত্বের সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে।
ভারতীয় পাসপোর্ট পেতে সাধারণত প্রমাণপত্র হিসেবে জন্ম সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, ভোটার আইডি, আধার কার্ড, রেশন কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি নথি জমা দিতে হয়। এই নথিগুলো যাচাইয়ের পরই পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। তবে, জাল নথিপত্রের মাধ্যমে পাসপোর্ট পাওয়ার ঘটনা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই ধরনের জালিয়াতি রোধে প্রশাসনকে আরও সতর্ক ও কঠোর হতে হবে। নথিপত্র যাচাই প্রক্রিয়ায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে এবং সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে। সাথে সাথে, সাধারণ জনগণকেও সচেতন হতে হবে এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে প্রশাসনকে অবহিত করতে হবে।
সর্বোপরি, জাল পাসপোর্ট ও নথিপত্র সংক্রান্ত এই ধরনের অপরাধ দেশের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য হুমকি স্বরূপ। এটি রোধে প্রশাসন ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।